বিটন চক্রবর্তী, নন্দীগ্রাম: রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর গড়ে তাঁরই বিরুদ্ধে পড়ল ‘মীরজাফর’ লেখা ফ্লেক্স। যা দেখে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। পাল্টা জবাব এসেছে প্রতিপক্ষ শিবির থেকেও।


তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেছেন, ‘আমি জনপ্রতিনিধি, জাতধর্ম দেখি না। কিছু লোক যারা ভয় পাচ্ছে, তারাও খরচ করছে, আমার অন্য ছবি দিচ্ছে। তাদের অভিনন্দন জানাই।’


পাল্টা তমলুক সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেছেন, ‘মীরজাফর মীরজাফরই। মানুষ বুঝেছে শুভেন্দু কত বড় গদ্দার।’


শনিবার নিজের নির্বাচনী এলাকা পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে এসেছিলেন শুভেন্দু। উপলক্ষ জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধন করা। কিন্তু, তার আগেই তারাচাঁদবাড়ে পড়ে এই ফ্লেক্স। পুজোর উদ্বোধনী মঞ্চ থেকেই তা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘গুরুদ্বারে গেলেও মাথায় কাপড় দিতে হয়, এখন অন্য ছবি দিচ্ছে। এতে লাভ হবে না। লক্ষ্মণ শেঠকে হারিয়েছি, মমতাকে আপনারা হারাচ্ছেন। শিকড় গভীরে।’


নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক আক্রমণ শানাতেই, পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি তৃণমূলও। দেবপ্রসাদ বলেছেন, ‘মানুষকে ভুল বোঝাতে প্ররোচিত করছে। মানুষের কাছে পৌঁছতেই এই কৌশল শুভেন্দুর।’


এর আগে গত পয়লা নভেম্বর তেখালিতেও শুভেন্দুর নামে পড়েছিল ‘মীরজাফর’ লেখা ফ্লেক্স। ফের একই ফ্লেক্স ঘিরে চলছে তরজা।


একদা সতীর্থ। এখন শত্রু! নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় যে শুভেন্দু অধিকারী-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা একযোগে সিপিএমকে আক্রমণ করতেন, এখন তাঁরাই একে অপরকে আক্রমণে ব্যাস্ত! প্রায় দেড় দশক আগে সিপিএমের নন্দীগ্রাম পুনর্দখলের সেই তিক্ত স্মৃতির দিনই নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে তিক্ত বাগযুদ্ধে জড়ায় দু’পক্ষ! নন্দীগ্রামে ভোটযুদ্ধের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও নাম না করে সিপিএমের সঙ্গে অধিকারী পরিবারের যোগসাজোশের অভিযোগে সরব হয়েছিলেন। নন্দীগ্রামের আন্দোলন নিয়ে তৃণমূল-শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে এই কৃতিত্ব নিয়ে তরজার মধ্যেই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে কংগ্রেসও। সবমিলিয়ে প্রায় দেড় দশক পর ফেরও রাজ্য রাজনীতিতে নন্দীগ্রামের রেশ অব্যাহত।