কলকাতা: প্রয়াত বাংলা কমিকসের প্রবাদপ্রতিম স্রষ্টা নারায়ণ দেবনাথ (Narayan Debnath demise)। বেলভিউ নার্সিংহোমে ২৫ দিন লড়াইয়ের পর হার মানলেন ৯৬ বছরের নারায়ণ দেবনাথ। আজ সকালে তাঁর শারীরিক অবস্থার আচমকা অবনতি হয়। রক্তচাপ ওঠানামা করতে থাকে। ওষুধ দেওয়া হলেও, চিকিৎসায় সাড়া মিলছিল না। গত তিনদিন ধরে ছিলেন ভেন্টিলেশনে। সকাল ১০টা ১৫ নাগাদ জীবনাবসান হয় তাঁর। চলে গেলেন হাঁদা-ভোঁদা, বাঁটুল, নন্টে-ফন্টের স্রষ্টা নারায়ণ দেবনাথ। 


নারায়ণ দেবনাথের মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন শিল্পী শুভাপ্রসন্ন। স্মৃতির পাতা উল্টে শুভাপ্রসন্ন বলেন, 'তিনি আমাদের অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন। তাঁর কৃতিত্ব কল্পনা করা যায় না। আমাদের বাংলায় এমন কোনও শিশু নেই যাঁরা তাঁর কমিক্স চরিত্রের কথা জানে না। অদ্ভুতভাবে তৈরি করা কিছু চরিত্র। যে চরিত্রের মধ্যে দিয়ে এই কমিক্সের সিরিজ এবং তারই মধ্যে অসাধারণ সব গল্প, তার সঙ্গে ছবি, এ এক অনবদ্য সৃষ্টি।'


শুভাপ্রসন্নের কথায় নারায়ণ দেবনাথের চলে যাওয়া এক গভীর শূন্যতা তৈরি করল। 'কত প্রজন্মের শিশু যে তাঁর কাজে আনন্দিত হয়েছে। এই ধরনের মানুষ চলে যাওয়া মানে একটা বড় শূন্যতার ব্যাপার। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি রোগে ভুগছিলেন। বয়সের ফলে। কিন্তু তাঁর কলম ধরা, তাঁর তুলি ধরা, তাঁর মাথায় সমস্ত কল্পনা, সেসবের কোনও খামতি ছিল না। আজ তাঁর মতো একজন স্রষ্টা, একজন শিল্পীর চলে যাওয়া একদিকে যেমন বাংলা সাহিত্যে, অন্যদিকে আবার শিশু সাহিত্যে এবং তারই সঙ্গে একজন অসাধারণ দক্ষ শিল্পীর মৃত্যু, এক অপূরণীয়, অপরিমেয় ক্ষতি। আমি তাঁকে সর্বান্তকরণে শ্রদ্ধা জানাই। আশা করি তাঁর সমস্ত কাজ আমরা বজায় রাখব এবং তাঁর কাজে আরও অনেক প্রজন্মের শিশু আনন্দ লাভ করবে।'


আরও পড়ুন: Narayan Debnath Death : আজ সব বাঁটুল ও নন্টে-প্রেমীদের অশৌচ, বললেন শোকবিহ্বল স্মরণজিৎ চক্রবর্তী


আর কখনও ভোঁদাকে বোকা বানানোর চেষ্টা করবে না হাঁদা! আর কখনও টাইপ করতে গিয়ে টাইপরাইটার ভেঙে ফেলবে না বাঁটুল!! হস্টেল সুপারের দুপুরের ঘুম উড়িয়ে দেবে না নন্টে-ফন্টে!!! রয়ে গেল সব অসাধারণ সব সৃষ্টি। বিদায় নিলেন স্রষ্টা। বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে। সেখান থেকে আর ঘরে ফেরা হল না নারায়ণ দেবনাথের।