কলকাতা: হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে গ্রুপ সি (Group C) চাকরিচ্যুতদের তালিকায় নাম আরও এক শাসক নেতার আত্মীয়র (Relative Of TMC Leader)। ওএমআর শিট বিকৃত করে চাকরি প্রাপকের তালিকায় নাম থাকার জেরে  চাকরি গেল বাঁকুড়ার বিকনা গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের ভাইপো বাপি বাউড়ির। ২০১৭-য় কাঞ্চনপুর হাইস্কুলে গ্রুপ সি পদে যোগ দেন বাপি বাউড়ি। চাকরিচ্যুতদের তালিকায় বাপি বাউড়ির নাম ১১৯ নম্বরে। তৃণমূলের ব্লক সভাপতির ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত বাপি। যদিও চাকরি হারানোর পর থেকে দেখা নেই বাপি বাউড়ির ভাইপোর চাকরিতে কোনও প্রভাব খাটাননি বলে দাবি তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের। 


ভেল্কিবাজি নাকি?
কারও শূন্য হয়ে গিয়েছে ৫৪, কারও ১ হয়ে গিয়েছে ৫৬। এ যেন পুরোপুরি ভেল্কিবাজি! এসএসসি গ্রুপ সি নিয়োগে এমনই ভয়াবহ দুর্নীতি সামনে এসেছে এদিন। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুসারে ওএমআর শিটে নম্বর সংক্রান্ত গোলমাল রয়েছে এমন ৩ হাজার ৪৭৮ জন পরীক্ষার্থীর তালিকা প্রকাশ করল এসএসসি। কতজন পরীক্ষার্থীর কত নম্বর বাড়ানো হয়েছে, হাইকোর্টের নির্দেশে তালিকা প্রকাশ কমিশনের। তা সামনে আসতেই কার্যত চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। কারণ তালিকার ছত্রে ছত্রে 'দুর্নীতি'। কারও আসল পরীক্ষায় জুটেছে ১, সেটা হয়ে গিয়েছে ৫৪। কারও আবার আসল পরীক্ষায় জুটেছে শূন্য, সেটা হয়ে গিয়েছে ৫৬। এমনই ভূরি ভূরি উদাহরণ ছড়িয়ে রয়েছে ওই তালিকায়। 


মোট ৩ হাজার ৪৭৮ জনের মধ্য়ে ৩ হাজার ৩০ জনেরই নম্বর দেদার বাড়ানো হয়েছে। ওই পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়ে আসলে যা নম্বর পেয়েছেন, তার থেকে অনেক অনেক বেশি নম্বর দেওয়া হয়েছে প্রকাশিত omr sheet-এ। তার জেরে মিলেছে চাকরি, ইতিমধ্যে দাপিয়ে চাকরিও করছেন তাঁরা।


অবশ্য সবার নম্বর বাড়েনি। তালিকায় ৩০৩১-৩৩৯২ ক্রমসংখ্যায় যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ও ওএমআর নম্বর এক। আবার, তালিকার ৩৩৯৩ থেকে শেষ পর্যন্ত যাঁদের ক্রমসংখ্যা, তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর থেকে ওএমআর শিটের নম্বর অনেকটাই কম। 


ওএমআর শিট দিয়ে কেকের প্যাকেট:
ওএমআর শিট দিয়ে তৈরি কেকের প্যাকেট!  কেক কিনতে গিয়ে শান্তিনিকেতনে মিলল ওএমআর শিট!  কীসের ওএমআর শিট? কীভাবেই বা এল দোকানে? নাম, রোল নম্বর লেখা ওএমআর শিট ঘিরে শোরগোল।


বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, "এটা সংগঠিত, পরিকল্পিত দুর্নীতি। এসএসসির মান সম্মান এখন আর কিছু নেই। যে উদ্দেশে এসএসসি তৈরি হয়েছিল, সেটিকেই বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অজান্তে এই দুর্নীতি হয়নি। উনি জানতেন না এটা হতে পারে না। আর যদি না জানেন তাহলে অযোগ্য হিসেবে তাঁর পদ ছেড়ে দেওয়া উচিত'।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, "আর কত অবাক হব আমরা? বাংলায় দুর্নীতি আর কতদিন চলবে? কত ক্ষেত্রে ঘটবে? বাংলার নাম এখন দুর্নীতিশ্রী। বিচারকরা একের পর এক দুর্নীতি সামনে আনার চেষ্টা করছে। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা রইল আমার। মুখ্যমন্ত্রী আর তৃণমূলের দৌলতে এত কিছু।" 
সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ি বলেন, "টাকার বিনিময়ে চাকরি দিচ্ছে এটা আমার ৪-৫ বছর ধরে বলে আসছি। সব স্তরে এই টাকার ভাগ যাচ্ছে। এখনও কিন্তু মাথাদের ধরা যাচ্ছে না। তাঁদের কাছে কেন পৌঁছচ্ছে না ইডি, সিবিআই।"        


আরও পড়ুন:চুটিয়ে অভিনয় করেছিলেন মিমির সঙ্গে, এবার ধারাবাহিকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অয়ন্না