ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : কোভিড চিকিৎসায় (Covid Treatment) নতুন প্রোটোকল প্রকাশ করল স্বাস্থ্য দফতর (West Bengal Health Ministry)। কোভিডের (Corona) তৃতীয় ঢেউয়ের (Third Wave) মোকাবিলায় জারি করা হয়েছে এই নতুন প্রোটোকল। যে প্রোটোকল অনুসারে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে কোভিড রোগীদের চিকিৎসা পদ্ধতি।  যাঁরা উপসর্গহীন (Covid Patients without Symptom) তাঁদের বাড়িতে  থেকে চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। হোম আইসোলেশন (Home Isolation) ও হোম ট্রিটমেন্টের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে উপসর্গহীনদের ক্ষেত্রে।


পাশাপাশি জানানো হয়েছে, উপসর্গহীনদের হোম আইসোলেশনের সঙ্গেই তাদের দিতে হবে মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ককটেল থেরাপি (Monoclonal Antibody Cocktail Therapy) । দিনে কতবার করে কতদিন এই থেরাপি দিতে হবে, সেটাও বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে যেখানে। মলুনপিরাভির (Molunpiravir) ওষুধ দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। যদিও প্রোটোকলে সাফ উল্লেখ, এই থেরাপি ওমিক্রন (Omicron) আক্রান্তের ক্ষেত্রে সেভাবে কার্যকরী নয়। সেক্ষেত্রে উপসর্গ থাকলে তাঁদের হাসপাতালে (Hospitalization) চিকিৎসার ক্ষেত্রেও রয়েছে নির্দিষ্ট গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে। কোন রোগীকে কোন ধরনের ওয়ার্ডে রাখা হবে তাও স্পষ্ট করে বলা হয়েছে প্রোটোকলে।


এমনিতেই রাজ্যে রোজ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। রাজ্য স্বাস্থ্য় দফতরের আশঙ্কা, এক সপ্তাহের মধ্যে আছড়ে পড়তে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এ ভাবে চললে খুব শীঘ্রই দৈনিক সংক্রমণ বেড়ে ৩০-৩৫ হাজারে গিয়ে ঠেকতে পারে। কলকাতায় গোষ্ঠী সংক্রমণও (Community Spread) দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্বাস্থ্য দফতর। মার্চ-এপ্রিল নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিকের দিতে এগোতে পারে।


এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চিকিৎসক দীপেন্দ্র সরকার বলেন, “কোভিডের তৃতীয় ঢেউ যে বাস্তব হতে চলেছে, তা অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম আমরা। এটা আগেও বাস্তবায়িত হতে দেখেছি। গত বছরও জেনেও না জানার ভান করে ছিলাম আমরা। তাতে দ্বিতীয় ঢেউ এসে ধ্বংস করে দিয়ে চলে গিয়েছিল। এ বারও তা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।”


তবে এ ব্যাপারে সরকার বা প্রশাসনের চেয়ে নাগরিকদের দায়িত্ব অনেক বেশি বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। দীপেন্দ্র বলেন, “নাগরিক হিসেবে আমাদের জনসমাবেশ এড়িয়ে চলা উচিত। এই সমাবেশগুলি বন্ধ হওয়া উচিত অবিলম্বে। সরকারের চেয়ে নাগরিকদের যোগদান সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। বর্ষবরণে হুল্লোড়ে মাতলে, তার খেসারত দিতে হবে আমাদেরই। বিদেশে কিন্তু ওমিক্রন ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে। আস্তে আস্তে নয়, সংখ্যাটা এক লাফে তিন গুণ হয়ে যাচ্ছে।”


আরও পড়ুন- ভারতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে ছাপিয়ে যাওয়ার পথে এগচ্ছে ওমিক্রন : রিপোর্ট