আবীর দত্ত, কলকাতা : ED-র পর NIA। ফের রাজ্যে হামলার মুখে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। সন্দেশখালিতে ED-র ওপর আক্রমণের পর এবার পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে বিস্ফোরণ-মামলার তদন্তে গিয়ে আক্রান্ত হলেন NIA-র আধিকারিকরা। ২ জন আহত। পাথর ছুড়ে ভাঙা হয় কেন্দ্রীয় এজেন্সির গাড়ির কাচ।


NIA-র দাবি, ভূপতিনগর বিস্ফোরণ-মামলায় শনিবার ভোরে একজনকে আটক করে নিয়ে আসার সময় তাঁদের আধিকারিকদের ওপর কয়েকজন চড়াও হন। আটক ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানায় উত্তেজিত জনতা। এরপরই NIA-র গাড়ি ঘিরে ফেলা হয়। পাথর ছুড়ে ভেঙে দেওয়া হয় গাড়ির কাচ।


এদিন ভূপতিনগরে বিস্ফোরণ-মামলায় তলব এড়ানো দুই তৃণমূল নেতা, কর্মীকে গ্রেফতার করে NIA। ধৃত বলাইচরণ মাইতি তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি, আরেক ধৃত মনোব্রত জানা স্থানীয় তৃণমূল নেতা। এর আগে দু’জনকে ২ বার তলব করে NIA। দু’জনেই হাজিরা এড়িয়েছিলেন। 


 ধৃত বলাইচরণের স্ত্রীর দাবি, তাঁর স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানায় NIA। বাড়িতে ঢুকেই সবকটি দরজা বন্ধ করে দেন তদন্তকারীরা। নিয়ে নেওয়া হয় তৃণমূল নেতার পরিবারের সবকটি মোবাইল ফোন। তাঁরা কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেননি এবং তাঁদের বাড়ির সামনে NIA-র ওপর কোনও হামলা হয়নি বলে দাবি করেছেন ধৃত বলাইচরণের স্ত্রী। 


পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযানের জন্য বাহিনী দেওয়ার আগেই NIA-র একটি দল গ্রামে পৌঁছে যায়। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ২০২২-এর ২ ডিসেম্বর, কাঁথিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার আগের রাতে, ভূপতিনগরে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণে ধূলিসাৎ হয়ে যায় এক তৃণমূল নেতার বাড়ি। তৃণমূলের বুথ সভাপতি-সহ ৩ জনের ঝলসানো মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ওই ঘটনার তদন্তভার পেয়েছে NIA।


অন্যদিকে, গতকালই উত্তরবঙ্গে নির্বাচনী সভায় NIA-র বিরুদ্ধে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে নিশানা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কুণাল ঘোষও অভিযোগ তোলেন NIA-র বিরুদ্ধে। আর তারপরই এভাবে রাজ্যে আক্রান্ত হল NIA।   


এদিকে ভূপতিনগর বিস্ফোরণ-মামলায় দুই দলীয় কর্মীকে আটক করায় এলাকায় বিক্ষোভ-মিছিল করে তৃণমূল । বিজেপি ও শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে সেই মিছিল থেকে। অনৈতিকভাবে আটক করা হয়েছে ওই দুজনকে, এই অভিযোগ তুলে ভূপতিনগরের নাড়ুয়াবিলা গ্রামে মিছিল করেন তৃণমূল কর্মীরা।

অন্যদিকে  NIA-র ওপর হামলা নিয়ে তৃণমূলকে নিশানা করেছেন ভগবানপুরের বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি। তাঁর দাবি, আইনের শাসন যাতে কায়েম করা না যায়, তার জন্যই সন্দেশখালির ধাঁচে হামলা চালানো হয়েছে। কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী ও পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিকের পাল্টা অভিযোগ, ভোট এলেই সক্রিয় হয়ে ওঠে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। এবারও তাদের কাজে লাগিয়ে ভোটে জেতার চেষ্টা চলছে।  


আরও পড়ুন :                                                              


'আমায় বের করো'... ঘুমন্ত পড়ুয়াকে স্কুল বাসে বন্ধ করেই বেপাত্তা ড্রাইভার ! খাস কলকাতায় ভয়াবহ ঘটনা