নয়াদিল্লি: উত্তাপ টের পাওয়া গিয়েছিল আগেই। এবার সরাসরি আক্রমণের প্রস্তুতি। ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ চলাকালীন, আবারও তেতে উঠছে পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি। এবার ইজরায়েলের বিরুদ্ধে হামলার প্রস্তুতি নিতে শুরু করল ইরান। আগেভাগেই আমেরিকাকে সরে দাঁড়াতে বলল তারা। এর আগে, সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালায় ইজরায়েল, তারই পাল্টা আক্রমণ চালাতে উদ্যত হল ইরান। ড্রোনের মাধ্যমে অথবা সরাসির ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে তারা ইজরায়েলে হামলা চালাতে পারে বলে জল্পনা শুরু হয়েছে।
ওয়াশিংটনের উদ্দেশে লিখিত সতর্কবার্তা জারি করেছে তেহরান। বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর জালে পা না দিতে সরাসরি আমেরিকাকে বার্তা দিয়েছে তারা। ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির রাজনৈতিক বিভাগের ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ মহম্মদ জামশিদি আমেরিকাকে সতর্ক করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আমেরিকা সরে না দাঁড়ালে তারাও আহত হবে। জামশিদির দাবি, ইজরায়েলে আমেরিকার কোনও শিবিরে যাতে আক্রমণ না হয়, তার অনুরোধ করেছে আমেরিকা।
এ নিয়ে আমেরিকার তরফে সরাসরি কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি এখনও পর্যন্ত। তবে পেন্টাগনের তরফে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে সেদেশের সংবাদমাধ্যম। জানা গিয়েছে, ইরানের হুঁশিয়ারি নিয়ে উদ্বিগ্ন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইজরায়েলের মাটিতে যদি আক্রমণ হানে ইরান, তাতে সামরিক এবং গোয়েন্দা ঘাঁটিগুলির পাশাপাশি বহু সাধারণ মানুষেরও প্রাণহানি ঘটবে বলে আশঙ্কা করছে তাঁর সরকার।
পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নিতে পারে আঁচ করেই, আগেভাগে তাই নিজের গরজে আমেরিকা ইরানের সঙ্গে কথোপকথন চালায় বলে সেদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। যাবতীয় সংঘাত, শত্রুতা সরিয়ে রেখে সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে ইজরায়েলি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করা হয় ওয়াশিংটনের তরফে। তাদের কাছে এই হামলার কোনও খবর ছিল না বলে জানানো হয় তেহরানকে।
তবে কূটনৈতিক মহলের দাবি, পশ্চিম এশিয়ায় নিজেদের সেনা এবং সামরিক ঘাঁটিগুলি বাঁচাতেই এই মুহূর্তে মরিয়া আমেরিকা। তাই নিজের গরজে ইরানের সঙ্গ যোগাযোগ করে তারা। ইরান জানিয়েছে, হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে ইজরায়েলকে। পাশাপাশি, লেবাননের হেজবোল্লা সংগঠনও ইজরায়েলকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। তাই সরাসরি ইজরায়েলের মাটিতে ইরান আঘাত হানবে, নাকি হেজবোল্লাকে সেই কাজে ব্যবহার করবে, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে।
সম্প্রতি সিরিয়ার দামাস্কাসে ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালায় ইজরায়েল, তাতে কমপক্ষে সাত ইরানি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে, যাঁদের মধ্যে ইরানের দুই জেনারেলও ছিলেন। গত কয়েক মাসে আগেও সিরিয়ায় ইরানের একাধিক সম্পত্তির উপর আঘাত হেনেছে ইজরায়েল। তবে এই প্রথম কূটনৈতিক বিভাগের কোনও সম্পত্তিতে হামলা চালানো হল। ফলে পরিস্থিতি তেতে উঠতে সময় লাগেনি।