সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: গুজবের জেরে (Barasat Lynching Death) গণপিটুনি ও তাকে কেন্দ্র করে কাজিপাড়ায় যে ঘটনা ঘটেছে, তার প্রধান চক্রান্তকারীর হদিস পেল পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, চক্রান্তকারী আর কেউ নন, কাজিপাড়ায় নিহত নাবালকের জ্যাঠামশাই এনজের নবি। খুন ও তথ্যপ্রমাণ লোপাটের পাশাপাশি গুজব ছড়ানোর ক্ষেত্রেও মূল ভূমিকা নিয়েছিল এনজের, এমনই মনে করছে পুলিশ। বারাসত, অশোকনগর, বনগাঁ তথা গোটা জেলা জুড়ে গুজবের গণপিটুনির ঘটনা কদিন আগেই তুমুল তোলপাড় ফেলেছিল। তার পর কাজিপাড়া থেকে নাবালকের দেহ উদ্ধার হলে এক রকম রণক্ষেত্র তৈরি হয় এলাকায়।


বিশদ...
পুলিশ মনে করছে, ওই পরিস্থিতি তৈরির নেপথ্যে মূল কলকাঠি নেড়েছিল এনজের-ই। নাবালকের দেহ উদ্ধারের পর তার চক্রান্তে প্রতিবেশী একজনের বাড়িতে ভাঙচুর চালান এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশ গেলে পুলিশের উপর হামলা হয়। দেহ উদ্ধারের পর অভিযুক্ত সম্ভবত রটিয়ে দিয়েছিল, ওই বাড়িতেই শিশুদের অঙ্গ পাচার করা হয়। এরপর পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়। ব্যবহার করতে হয় কাঁদানে গ্যাস। ইটবৃষ্টি শুরু করেন এলাকার বাসিন্দারা। এলাকার এক মহিলা এবং চাকদার এক ভবঘুরের মহিলার ছবি দিয়ে প্রথম হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে গুজব ছড়ানো শুরু করেন এনজার। তার পর থেকে গোটা জেলা জুড়ে গুজবকে কেন্দ্র করে গণপিটুনির ঘটনা ঘটতে থাকে বলে পুলিশ জানিয়েছে। গত পরশু দিন নিহত নাবালকের বাবা-মায়ের সামনেই অভিযুক্ত স্বীকার করে সে খুন করেছে। খুন করার পাশাপাশি দেহ লোপাট করারও পরিকল্পনা করেছিল এনজার, এমনও জানায় সে। আজ তাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে  গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করবে পুলিশ।


যা জানা গেল...
পরিস্থিতি এমনই হয়েছিল যে দিনচারেক আগে গুজবের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রচার করতে দেখা যায় স্বয়ং জেলার পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝারখারিয়াকে। যেখানে পুলিশের সামনে এক মহিলাকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছিল, সেখানেও রাস্তায় নেমে গুজব রুখতে প্রচার চালাতে দেখা যায় পুলিশ সুপারকে। বিষয় নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ কথাও বললেন স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে। গুজবের বশে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়ার জন্যই সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন জানান তিনি। গত বুধবারই সাংবাদিক বৈঠক করে পুলিশ সুপার জানিয়ে ছিলেন, কাজিপাড়ায় যা ঘটেছে তা ছিল একটি খুনের ঘটনা। এর সঙ্গে ছেলেধরার কোনও সম্পর্ক নেই। সাধারণ মানুষের কাছে অপপ্রচারে কান না দেওয়ার আবেদনও করেছিলেন। এবার এই গোটা ঘটনার মূল চক্রান্তকারীর নামও জানতে পারল পুলিশ।


 


আরও পড়ুন:ফের ছেলেধরা সন্দেহে গণপ্রহার, অশোকনগর ও মোহনপুরে গণপিটুনি, আক্রান্ত পুলিশ; গ্রেফতার ৮