সমীরণ পাল, প্রবীর চক্রবর্তী, শুভেন্দু ভট্টাচার্য, উত্তর ২৪ পরগনা : বারাসাতে সরকারি জমিতে তৃণমূলের পার্টি অফিস। একতলার পর শুরু হয়েছে দোতলার কাজ। শাসকদলের পার্টি অফিস বলেই কি নিষ্ক্রিয় প্রশাসন? প্রশ্ন তুলছে বিজেপি। অন্যদিকে কামারহাটিতে উচ্ছেদ করতে গিয়ে বাধা পেলেন তৃণমূল কাউন্সিলর। গত মাসে মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেছিলেন, সরকারি জমি দখল মুক্ত করতে হবে। দরকারে আমার বাড়ি থেকে শুরু করতে হবে। জবরদখলকারীদের বিরুদ্ধে মুখ্য়মন্ত্রীর কড়াবার্তার পর রাজ্য় জুড়ে চলছে উচ্ছ্বেদ অভিযান। ফুটপাতের দোকান থেকে সরকারি জমি, জবরদখল মুক্ত করতে চলছে বুলডোজারও। কিন্তু, এর ঠিক উল্টো ছবি ধরা পড়ল উত্তর ২৪ পরগনায়।
 
একদিকে বারাসাতে এখনও সরকারি জমিতেই থেকে গেছে তৃণমূলের পার্টি অফিস। একতলার উপর তৈরি হচ্ছে দ্বিতীয় তল। অন্যদিকে কামারহাটিতে জবরদখল হঠাতে গিয়ে বাধার মুখে পড়লেন তৃণমূল কাউন্সিলরই। বারাসাতের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের হাটখোলায় সরকারি জমিতে বহাল তবিয়তে দাঁড়িয়ে রয়েছে তৃণমূলের পার্টি অফিস। শুধু তাই নয়। একতলা পার্টি অফিস দোতলা করতে তোলা হয়েছে কংক্রিটের পিলারও। তৃণমূল পরিচালিত বারাসাত পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যানের দাবি, সাধারণ মানুষের কাজের স্বার্থে এক সময় জমিটি চেয়েছিলেন তৎকালীন তৃণমূলের কাউন্সিলর। যদিও পরবর্তীকালেই তা পার্টি অফিসে বদলে যায়। স্থানীয় সূত্রে দাবি, প্রায় ১২-১৩ বছর ধরে সরকারি জমিতে রয়েছে তৃণমূলের অফিসটি। 


বারাসাত পুরসভার তৃণমূল ও প্রাক্তন চেয়ারম্য়ান সুনীল মুখোপাধ্য়ায় বলেছেন,' ওখানে একটা ঘর নিয়ে ওখানে কিছু ছেলে একটা ক্লাব ঘর করে রেখেছিল। তৎকালীন যিনি কাউন্সিলর ছিলেন তিনি আমাদের বলেছিলেন ওখানে একটা বসার জায়গা করবেন। এটা যদি আপনারা অনুমতি দেন। দখল যখন হয়ে যাচ্ছে ওরা যখন চাইছে আমরা তখন একটা বসার জায়গা করে দিই। ওরা একটা বসার জায়গা করেছিল। পরে সেটাকে পার্টি অফিসে রূপান্তরিত করেছে।' বারাসাত পুরসভার তৃণমূল নেতা ও চেয়ারম্য়ান  অশনি মুখোপাধ্য়ায় বলেন,' দীর্ঘদিনের অফিস, ওখানে ছিন্নমূল মানুষের বসবাস ইন্দিরা গান্ধী কলোনী। সেই মানুষদের সংগঠিত করে সঠিক পথে পরিচালনা করার জন্য় ওই অফিস। হয়তো বোর্ডে তৃণমূল কংগ্রেসের নাম আপনি দেখেছেন। কিন্তু, সাধারণ মানুষ ওখানে রিক্রিয়েশনের জন্য় আসেন। প্রচুর গরিব মানুষের বসবাস। তারা ক্য়ারাম খেলেন, টিভি দেখেন আমি দেখেছি। আবার কখনও কখনও পার্টির প্রক্রিয়া, পার্টির মিটিংও হয়, এই কথাটা সত্য়ি।' 


আরও পড়ুন, রথযাত্রার সকালেই দুর্যোগ? বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা, আগামীকাল কেমন থাকবে আবহাওয়া ?


একদিকে বারাসাতে যখন এই ছবি,তখন অন্যদিকে কামারহাটিতে সরকারি জমিতে দখলদার হঠাতে গিয়ে,বাধার মুখে পড়লেন তৃণমূল কাউন্সিলর,দিলেন পাল্টা হুঁশিয়ারিও। কামারহাটি পুরসভার  ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর   বিমল সাহা বলেন, বেশি বাড়াবাড়ি করলে এখনই ভাঙব আমি বলে দিলাম। ২৪ ঘণ্টা টাইম দিলাম, কাল সকালে যেন ফাঁকা দেখি, অনেক হয়েছে, না হলে জায়গা কিনে, ভাড়া দিয়ে দোকান করো, কাজে দেবে।' কামারহাটি পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের উড়ানপাড়ায়, আগরপাড়া স্টেশন রোডের দু’ধারে ঝুপড়ি ও দোকান রয়েছে। দখলদারদের সরাতে অভিযানে যান পুরসভার চার কাউন্সিলর। সেখানেই বাধার মুখে পড়েন তৃণমূল কাউন্সিলর বিমল সাহা।