অর্ণব মুখোপাধ্যায় ও সৌমিত্র রায়, কলকাতা: লোকসভা ভোটের আগে দল ছাড়লেন কাঁকুড়গাছির নিহত বিজেপি কর্মী (BJP Worker Murder) অভিজিৎ সরকারের দাদা (Abhijit Sarkar Brother Quit BJP)। ভাইয়ের খুনে অভিযুক্তদের দলে নেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগ তুলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নিহত বিজেপি কর্মীর দাদা। এই নিয়ে গেরুয়া শিবিরকে আক্রমণ করেছে তৃণমূল।


কী খেদ পরিবারের? 
নিহত বিজেপি কর্মীর দাদা, বিশ্বজিৎ সরকারের খেদ, 'আমার দলের লোকেরা আমাদের মতো শহিদ পরিবার আর ছোট কর্মীদের খোঁজই রাখে না।' সেই জন্যই কি ভোটের মুখে দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন অভিজিৎ সরকারের দাদা।  শুধু তাই নয়। প্রতিবাদ জানিয়ে সাদা কাপড়ে ঢেকে দিলেন ভাইয়ের স্মৃতিতে তৈরি বেদি। ২০২১ সালের ২ মে বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার দিন কাঁকুড়গাছির বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারকে শ্বাসরোধ করে ও মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে খুনের অভিযোগ ওঠে। এই মামলায় ২০২১-এর সেপ্টেম্বরে ২০ জনের বিরুদ্ধে খুন, মারধর, হুমকি, লুঠপাট-সহ একাধিক ধারায় চার্জশিট দেয় সিবিআই। কয়েকজন গ্রেফতারও হয়। বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন অভিজিৎ সরকারের খুনের মামলা। এর মধ্যেই দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে ইস্তফা দিলেন নিহত বিজেপি কর্মীর দাদা বিশ্বজিৎ সরকার। তাঁর অভিযোগ, ভাইয়ের খুনে অভিযুক্তদের রীতিমতো জামাই আদর করে বিজেপিতে যোগদান করানো হয়েছে। সেই ক্ষোভেই দলত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিহত বিজেপি কর্মীর দাদা। বিজেপির তরফে দেওয়া ৫ লক্ষ টাকাও ফেরত দিতে চান তিনি। তাঁর কথায়, 'বেদির ১০ হাত দূরে একটা বিজেপির মঞ্চ তৈরি করা হয় এবং আমরা জানতে পারি যে, আমার ভাইয়ের খুনের সঙ্গে যুক্ত, সেই খুনি এবং সেই খুনির পরিবার যারা আমাদের ধমকি দিচ্ছে, যাদের মামলা হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর ঘরে, এবং তীর্থঙ্কর ঘোষের ঘরেও সেই মামলার রেফারেন্স দেওয়া রয়েছে, সেই সমস্ত আসামিরা জয়েন করছে।' তাঁর আরও দাবি, দলের উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ থেকে শুরু করে শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্য বিজেপি সভাপতি 
সুকান্ত মজুমদার-সহ দলীয় নেতৃত্বকে হোয়াটসঅ্যাপ করে দল ছাড়ার কথা জানিয়েছেন। বললেন, 'আমি রাজ্যের সকলকে জানালাম, আমাদের জেলা সভাপতিকে জানালাম যে, দাদা আমার মনে হচ্ছে বিজেপি আর তাদের শহিদ পরিবারের পাশে নেই। আমাদের শহিদ পরিবারের দুটো ভোটও বিজেপির প্রয়োজন নেই। বিজেপির এখন আসামিদের ৩০টা ভোট প্রয়োজন।' 

তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া...
এই নিয়ে পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ' তুমি তারপরে খুনিদের দলে নিয়ে নিলে? ওয়াশিং মেশিনে ঢুকিয়ে দিলে? সুতরাং এই পার্টির কোনও নিজস্ব নীতি নেই, কোনও আদর্শ নেই। কোনও সহানুভূতি নেই তাদের কর্মীদের প্রতি। বিজেপির তরফে শমীক ভট্টাচার্যের অবশ্য বক্তব্য,'আমি জানি না...তবে অভিযোগটা গুরুতর ও মারাত্মক...পার্টির মধ্যে আলোচনা করব...খুনে অভিযুক্তরা বিজেপিতে যোগ দেবে, এটা হতে পারে না।' ভোট-পরবর্তী হিংসায় ৩ বছর আগে খুন হয়েছেন কাঁকুড়গাছির বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার। বিচারের আশায় আদালতের মুখ চেয়ে রয়েছে নিহতের পরিবার। এই পরিস্থিতিতে অভিযুক্তদের বিজেপিতে যোগদান করানোর ঘটনা বাড়িয়েছে ক্ষোভ।  


 


আরও পড়ুন:ব্যারাকপুর থেকে যেন প্রার্থী না হন অর্জুন সিংহ, সই সংগ্রহ করে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠাচ্ছেন সোমনাথ শ্যাম?