সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: পাঁচিল চাপা পড়ে মারা গেল আড়াই বছরের শিশু (De Ganga Child Death)। গত কাল, বুধবার, সন্ধে সাড়ে পাঁচটা নাগাদ দেগঙ্গার চৌরাশি গ্রাম পঞ্চায়েতের শিমুলিয়া উত্তরপাড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। মৃত শিশুর নাম সুমাইয়া খাতুন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। 


কী ঘটেছিল?
সুমাইয়ার বাবা, সিন্টু মন্ডল পেশায় রাজমিস্ত্রি। তাঁর চার কন্যাসন্তান রয়েছে। প্রতিদিনের মতো বুধবার সন্ধেবেলাতেও বাড়ির উঠোনে খেলা করছিল সুমাইয়া। তাঁদের বাড়ির পাশে, পাঁচিল তুলছিলেন আনারুল মন্ডল। অভিযোগ, কোনও পরিকল্পনা ছাড়াই কাজ চলছিল। আচমকা, সেই পাঁচিল হুড়মুড়িয়ে খুদে শিশুর উপর পড়ে। বাড়ির লোকজন ছুটে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পৌঁছয় দেগঙ্গা থানার পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। দেগঙ্গার চৌরাশি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বাপ্পা মন্ডল ও উপপ্রধান লিয়াকত আলিও ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। কন্যাহারা পরিবারের পাশে দাঁড়ান, সমবেদনা জানান। অসহায় পরিবারটিকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার আশ্বাসও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু কী ভাবে ঘটল এই ঘটনা? পরিকল্পনাহীন ভাবে পাঁচিল তোলার অভিযোগ কতটা সত্যি? সত্যি হলে প্রশাসনের নজর এড়াল কী ভাবে? হালেই গার্ডেনরিচের ঘটনায় ১২ জনের মৃত্যুতে তুমুল শোরগোল পড়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। কিন্তু বাস্তব কি তাতে একচুলও বদলেছে? শিশুর মৃত্যুতে ফের প্রাসঙ্গিক এই প্রশ্ন।


গার্ডেনরিচ নিয়ে...
গার্ডেনরিচের বেআইনি বহুতল ভেঙে পড়ে অন্তত ১২ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে হালেই। গত কাল, এসএসকেএমে ভর্তি মারিয়াম বিবি নামে এক জখমের মৃত্যু হলে প্রাণহানির সংখ্যা ১২-য় পৌঁছয়।  এসএসকেএমে আরও ৩ জন ভর্তি রয়েছেন যাঁদের মধ্যে এক জনের অবস্থা সঙ্কটজনক বলে গত কালই খবর পাওয়া গিয়েছিল। বহুতল-বিপর্যয়ের পর প্রশ্ন উঠেছিল, কার গাফিলতিতে এতগুলি মানুষের প্রাণ গেল? এলাকায় বেআইনি নির্মাণের বিষয়টি কি স্থানীয় কাউন্সিলর জানতেন না? এই নিয়ে তাঁকে 'ক্লিনচিট' দিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তবে একই সঙ্গে একথা মেনে নেন, 'বেআইনি নির্মাণ সামাজিক ব্যাধি, দূর করতে পারছি না। কেন বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে বুঝতে পারছি না।'  সেদিনের সেই ভয়াবহ ঘটনার পর আজ, ওই এলাকার হেলে পড়া বাড়ি ভাঙতে আসে পুরসভার টিম। সঙ্গে ছিল পুলিশবাহিনী। কিন্তু এত বড় বিপর্যয় সত্ত্বেও এই পদক্ষেপে দেরি কেন? উত্তর নেই।


আরও পড়ুন:ভোটের মুখে ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূল কর্মীকে খুনের চেষ্টা, বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ