সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: কাটমানি দেওয়ায়, আবাস যোজনার (Abash Yojna) প্রথম কিস্তির টাকা অ্যাকাউন্টে পড়েছিল। কিন্তু  দ্বিতীয় কিস্তির আগে, আবার কাটমানি না দেওয়ায়, মিলছে না টাকা, পঞ্চায়েতের তৃণমূল (TMC) সদস্যের বিরুদ্ধে, এমনই অভিযোগ করেছেন, দেগঙ্গা, চাঁপাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের এক বাসিন্দা। যদিও অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল সদস্য। 


সুবিধা পেতে কাটমানি?


কাটমানি না দিলে, আবাস যোজনার টাকা মিলবে না। অভিযোগ, এমনই শর্ত দিয়েছেন, তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Paraganas) দেগঙ্গা, চাঁপাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। 


অভিযোগকারী গোলাম নবির দাবি, গতবছর, আবাস যোজনা প্রকল্পের সুবিধা পান তিনি। প্রথম কিস্তি বাবদ তাঁর অ্যাকাউন্টে ঢোকে ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু, অভিযোগ, সেখান থেকে, পঞ্চায়েত সদস্যকে দুই হাজার টাকা কাটমানি দিতে হয়েছিল। দ্বিতীয় কিস্তির সময়, অগ্রিম ১০ হাজার টাকা দাবি করেন, পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য মহিব্বর মোল্লা। অভিযোগ, সেই টাকা না দেওয়ায়, অবশিষ্ট টাকা তিনি আর পাননি। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি বলে দাবি।


অভিযোগকারী গোলাম নবির দাবি, 'দ্বিতীয় কিস্তির টাকা নেওয়ার সময় পঞ্চায়েত সদস্যকে বললে তিনি ১০ হাজার টাকা কাটমানির দাবি করেন। আর সেই কাটমানির টাকা না দেওয়ায় এক বছর ধরে টাকা আটকে রেখেছে। যাদের দো'তলা বাড়ি এমনকী প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘরের উপভোক্তা নয় এমন ব্যক্তিদের ঘর পাইয়ে দিয়েছেন তিনি।'


অভিযোগকারীর স্ত্রী তনুজা বিবির কথায়, 'প্রধানের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি।'


‘কাটমানি’র বিনিময়ে প্রকল্পের সুবিধা? অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। দেগঙ্গার চাঁপাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য মহিব্বর মোল্লাস বলেন, 'গোলাম নবীর নাম ভুল থাকার কারণে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা আটকে রয়েছে। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।' 


 



এই ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বারাসাত সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তরুণকান্তি ঘোষ বলেন, 'যেদিন থেকে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় এসেছে তখন থেকে কাটমানি প্রথা চালু হয়েছে। অর্থাৎ কাটমানি না দিলে সাধারণ মানুষ সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাবে না। বিষয়টা নিয়ে বিজেপির পক্ষ থেকে ধিক্কার জানাই।'


আরও পড়ুন: Purulia News: কাজে পুনর্বহালের দাবি, পুরুলিয়ার হাসপাতালে অস্থায়ী স্বাস্থ্য কর্মীদের বিক্ষোভ


দেগঙ্গার চাঁপাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা ও প্রধান হুমায়ুন রেজা চৌধুরী বলেন, 'কাটমানি প্রসঙ্গ নিয়ে তার কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। আর এরকম নজির চাঁপাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের নেই। যদি কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।'


অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন, পঞ্চায়েত প্রধান। কিন্তু কবে মিলবে টাকা? তারই প্রতীক্ষায় এই গ্রামবাসী।