সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: সন্দেশখালিতে তিন বিজেপি কর্মী খুনের মামলায় পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। আদালতের ভর্ৎসনার মুখে তদন্তকারী আধিকারিক। 
চার্জশিটে কেন শেখ শাহজাহানের নাম বাদ পড়েছে? প্রশ্ন করলেন বিচারপতি। ১ এপ্রিলের মধ্যে জবাব তলব করল আদালত। 


আর যা...
বিচারপতি সেনগুপ্তের প্রশ্ন, 'মামলায় মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহান। সাক্ষীরা তার নামই জানিয়েছে। তাও কেন চার্জশিট থেকে নাম বাদ দিল পুলিশ?' পুলিশের পাল্টা সওয়াল, 'সাক্ষীরা বিশ্বাসযোগ্য ছিলেন না। তাই বাদ দেওয়া হয়েছে।' 'আপনিই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন যে, সাক্ষী বিশ্বাসযোগ্য নয়', বিস্ময়প্রকাশ করলেন বিচারপতি। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোট পরবর্তী হিংসায় সন্দেশখালির ভাঙ্গিপাড়া গ্রামে ৩ বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় FIR-এ নাম ছিল বর্তমানে সাসপেন্ডেড তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের। ন্য়াজাট থানায় খুন ও অস্ত্র আইনে শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ঘটনায় তৃণমূল ও বিজেপি দু'দলই থানায় FIR করেছিল। তৃণমূলের তরফে যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছিল, তাদের প্রত্য়েকের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হলেও, বিজেপির অভিযোগপত্রে নাম থাকা শেখ শাহজাহানের নাম ছিল না চার্জশিটে! গত ফেব্রুয়ারি মাসে, হাইকোর্টে সন্দেশখালি সংক্রান্ত একটি মামলায় রাজ্য সরকারের আইনজীবী বলেন, শেষ ৪ বছরে ৪৩টি FIR হয়েছে। যার মধ্যে ৪২টিতে চার্জশিট হয়েছে। ধর্ষণের ধারাও যুক্ত আছে। বাকি তদন্ত চলছে। জমি দখলের অভিযোগে ৭টি FIR হয়েছে। সেগুলিতে চার্জশিট হয়েছে। ৮ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৪টি FIR হয়েছে। ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ১৫ জনকে। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, 'তার মানে ৪ বছর ধরে এই ঘটনা ঘটছিল। কিন্তু কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। শেষ পর্যন্ত বিস্ফোরণ ঘটেছে। রাজ্য বলছে, যে জমি দখল করা হয়েছে, সেগুলি ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তার মানে কিছু একটা ঘটেছে।' 

তপ্ত সন্দেশখালি...
এমনিতেই, চলতি বছরের গত ৫ জানুয়ারিতে ইডি-র উপর হামলার ঘটনার পর থেকে টানা শিরোনামে রয়েছে সন্দেশখালি। সে দিন ইডি আধিকারিকদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যদের উপরও চড়াও হয়েছিল শেখ শাহজাহানের অনুগামীরা, এমনই অভিযোগ। পার পাননি খবর করতে যাওয়া সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা। তাঁদেরও মারধরের অভিযোগ ওঠে শাহজাহান-অনুগামীদের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার ৫৬ দিনের মাথায় গ্রেফতার হয় সাসপেন্ডেড তৃণমূল নেতা। কিন্তু তার মধ্যে তীব্র বিক্ষোভ-প্রতিবাদের আগুন জ্বলে ওঠে সন্দেশখালি। জোর করে জমি দখল থেকে শুরু করে নারী নির্যাতন, একের পর এক অভিযোগ জমা হয়। বিষয়টি নিয়ে কড়া সমালোচনা শুরু করেন বিরোধীরা। বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে অমিত শাহ বলেন, 'সন্দেশখালিতে হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে। বিজেপি কর্মীদের ওপর সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল। কংগ্রেস-সহ ইন্ডিয়া জোটের শরিকরা সন্ত্রাসের রাজনীতি করে।'


আরও পড়ুন:ED, CBI, আদালত সঙ্গে রয়েছে, তাও বকেয়ার হিসেব দেওয়ার ক্ষমতা নেই BJP-র: অভিষেক