সমীরণ পাল, আশাবুল হোসেন ও সন্দীপ সরকার, ব্যারাকপুর : ব্যারাকপুরে এবার অর্জুন-শুভেন্দুর দ্বৈরথ। অর্জুন সিং তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর শুভেন্দু অধিকারীকে ব্যারাকপুরের সাংগঠনিক দায়িত্ব দিয়েছে বিজেপি। বুধবার শ্যামনগরে প্রথম কর্মিসভা করেন তিনি। অর্জুন সিংয়ের দলত্যাগে বিজেপির কোনও ক্ষতি হবে না বলেও দাবি করেন শুভেন্দু। অন্যদিকে, তাঁর কর্মসূচি নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল।
ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফেরার পর আপাতত শুভেন্দু অধিকারীকে ব্যারাকপুরের দায়িত্ব দিয়েছে বিজেপি। বুধবার বিজেপির ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে প্রথম কর্মিসভায় অংশ নেন শুভেন্দু। শ্যামনগরের কাউগাছি মোড়ের কাছে এই কর্মিসভা হয়। কিন্তু, তার আগে এদিন সকালেই শ্যামনগর স্টেশনের কাছে দেখা যায় একটি ব্যানার। যেখানে বিজেপির ব্যারাকপুর সাংগঠনিক সভাপতি সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে অর্জুন সিংয়ের এজেন্ট বলে লেখা হয়। তাঁকে বিজেপির জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবিও তোলা হয় এই ব্যানারে।
এই প্রেক্ষাপটে পোস্টার ঘিরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, শুভেন্দু অধিকারী কি অর্জুনের গড় ব্যারাকপুরে ভাঙন ঠেকাতে পারবেন ?
গত কয়েক বছরে এই দু’জনের রাজনৈতিক সমীকরণ বারবারই বদলেছে। একসময়ে তাঁরা দু’জনই ছিলেন জোড়াফুল শিবিরের সৈনিক। ২০১৯’এ অর্জুন সিং পদ্ম শিবিরে যাওয়ার পর কিছুদিনের জন্য তাঁরা আলাদা হয়ে যান। বছর দেড়েক পর অর্জুনের পথে হেঁটে, শুভেন্দু অধিকারীও বিজেপিতে যোগ দেন। বিভিন্ন ইস্যুতে একসুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়দের নিশানা করেন। এরপর পাট ইস্যুতে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেও, পয়লা মে’র সাংবাদিক বৈঠকে, শুভেন্দুকে আরও দায়িত্ব দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন অর্জুন। তিনি বলেছিলেন, শুভেন্দু অধিকারীকে বাংলার দায়িত্ব দেওয়া উচিত।
এখন সেই অর্জুন দল ছাড়ার পর, তাঁর গড়ে বিজেপির সংগঠন ধরে রাখতে উদ্যোগী হলেন শুভেন্দু অধিকারী। এপ্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ভাটপাড়ায় ২০১৪ তেও আমাদের লিড ছিল। ২০২৪-এও ব্যারাকপুর আমাদের থাকবে। বিজেপির সাংসদ চলে গেলেও বিজেপি থাকবেই। শুভেন্দু অধিকারী সব জেলায় যাচ্ছেন। ওখানেও যাচ্ছেন।
ব্যারাকপুরে অর্জুন সিং আর শুভেন্দু অধিকারীর দ্বৈরথ আগামী দিনে কোন খাতে গড়াবে ? সেটাই এখন দেখার।