অশোকনগর : "বাংলায় তৃণমূলের সব বিধায়ককে ঢুকিয়ে দিন। তৃণমূলের সব সাংসদকে ভেতরে ঢুকিয়ে দিন। আমার কালীঘাটের একা দুর্গা, একাই একশো। ৪২-এ ৪২ বুঝে নেবেন।" হুঁশিয়ারি অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামীর।
তাঁর সংযোজন, "শুধু বাংলা নয়, সারা ভারতে। জানুয়ারি থেকে বুঝতে পারবেন। সবকটাকে ভরে দিন। সুতরাং, আগামীদিনে বিজেপিমুক্ত ভারত চাই। ভারতের মানুষের বাঁচার এক এবং একমাত্র ঠিকানা বিজেপিমুক্ত ভারত।"
পাল্টা জবাব দিতে ছাড়েনি বিজেপি। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "তৃণমূলের কংগ্রেসের কোনও নেতা-মন্ত্রী, বিধায়ক বা সাংসদের এই মুহূর্তের কোনও বক্তব্যের সমাজজীবনে কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। মানুষ নিজেদের জীবন-জীবিকা দিয়ে গত ১২ বছর ধরে তৃণমূল কংগ্রেসকে পরীক্ষা করেছে। তৃণমূল এখন পরীক্ষিত এবং পরিত্যক্ত সত্যি। মানুষ তৃণমূলের বিসর্জনের অপেক্ষা করছে। এ ধরনের অনেক হুমকির সঙ্গে আমরা অভ্যস্ত, পরিচিত আছি। তবে, এরা অপ্রাসঙ্গিক । দলের মধ্যে টিআরপি বাড়ানোর চেষ্টা করছে। তৃণমূলের যার যত হুমকি শুনবেন, তাঁদেরই বিজেপি নেতাদের কাছে গভীর রাতে ফোন আসে।"
রেশন বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriyo Mallick)। তাঁর বিরুদ্ধে গরিবদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ তুলে, তৃণমূলকে আক্রমণ করছে বিরোধীরা। এই অবস্থায়, সম্প্রতি দলীয় প্রধান-উপপ্রধানদের বার্তা দেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের জেলা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী। মনে করান জনপ্রতিনিধিদের কর্তব্য। সেই সঙ্গে বলেন, কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে 'দিদিকে বলো'তে জানাতে।
তৃণমূল নেতা নারায়ণ গোস্বামী বলেন, "প্রধান, উপপ্রধান, মেম্বার যাঁরা আছেন, তাঁরাও এটা ভাববেন যে, মানুষকে ছোট করে দেখবেন না, এই চেয়ার চিরকালের জন্য নয়। এ তো আমার পৈত্রিক চেয়ার নয়, যে আমার বাবা দিয়ে গেছে। এ বাবাকেলে চেয়ার। কোনও স্তরের নির্বাচিত প্রতিনিধির বিরুদ্ধে যদি কোনও অভিযোগ থাকে, আপনি সরাসরি ফোন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে রেজিস্টার করান। আমি বলছি সে বাইরে থাকবে না, সে জেলে চলে যাবে।"
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতারির পর যে তরজা শুরু হয়েছিল, তা আরও বাড়ল তৃণমূল পরিচালিত উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতির মন্তব্যে। প্রসঙ্গত, রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতারির পর জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পাশে দাঁড়ান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার অবশ্য় মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের নামও শোনা যায় ধৃত জ্য়োতিপ্রিয়র মুখে।