সমীরণ পাল ও রুমা পাল, বারাসাত ও কলকাতা : জনপ্রতিনিধিদের কর্তব্য মনে করালেন তৃণমূল পরিচালিত উত্তর ২৪ পরগনা (North 24 Paragana) জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী (Narayan Goswami)। বললেন, কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে 'দিদিকে বলো'তে জানাতে।


রেশন বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriyo Mallick)। তাঁর বিরুদ্ধে গরিবদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ তুলে, তৃণমূলকে আক্রমণ করছে বিরোধীরা। এই অবস্থায়, দলীয় প্রধান-উপপ্রধানদের বার্তা দিলেন, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের জেলা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী। মনে করালেন জনপ্রতিনিধিদের কর্তব্য। সেই সঙ্গে বললেন, কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে 'দিদিকে বলো'তে জানাতে।


তৃণমূল নেতা নারায়ণ গোস্বামী বলেন, "প্রধান, উপপ্রধান, মেম্বার যাঁরা আছেন, তাঁরাও এটা ভাববেন যে, মানুষকে ছোট করে দেখবেন না, এই চেয়ার চিরকালের জন্য নয়। এ তো আমার পৈত্রিক চেয়ার নয়, যে আমার বাবা দিয়ে গেছে। এ বাবাকেলে চেয়ার। কোনও স্তরের নির্বাচিত প্রতিনিধির বিরুদ্ধে যদি কোনও অভিযোগ থাকে, আপনি সরাসরি ফোন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে রেজিস্টার করান। আমি বলছি সে বাইরে থাকবে না, সে জেলে চলে যাবে।"


এনিয়ে পাল্টা কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "কে দিদিকে বলছেন ! এখন ওঁর বিরুদ্ধেও কেউ কেউ বলেছেন কি না সেটাও আমাদের জানা নেই। এ ধরনের বক্তৃতা বা এ ধরনের আত্ম-সমীক্ষা জ্যোতিবাবুর পরে আর কাউকে মঞ্চ থেকে করতে দেখা যায়নি। প্রভাব পড়েছে।"


এ প্রসঙ্গে অবশ্য নারায়ণ গোস্বামী বলেছেন, "অনেক সময় চেয়ার পেলে হয়, এটা আমরা দু'-একটা জায়গায় দেখেছি বা এর আগে বামফ্রন্টের জমানাতেও দেখেছি, চেয়ার পেলে মানুষের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়ে যায়। জনপ্রতিনিধি কিন্তু 'জন' বাদ চলে যায়। শুধু প্রতিনিধি থাকে। সেটা যাতে না হয়, এটা আমরা মনে করার চেষ্টা করেছি।"

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতারির পর যে তরজা শুরু হয়েছিল, তা আরও বাড়ল তৃণমূল পরিচালিত উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতির মন্তব্যে। প্রসঙ্গত, রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতারির পর জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পাশে দাঁড়ান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার অবশ্য় মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের নামও শোনা যায় ধৃত জ্য়োতিপ্রিয়র মুখে।