সমীরণ পাল, দেগঙ্গা : বাবা থাকা সত্ত্বেও কারও ভোটার তালিকায় অভিভাবকের জায়গায় শ্বশুরের নাম, আবার কেউ নিজে মুখেই স্বীকার করছেন, মামাকে বাবা সাজিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তোলার কথা। উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় ভোটার তালিকায় এমনই নানা গরমিল পাওয়া গেল। যা নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক তরজা।

Continues below advertisement

কারও বাবা জীবিত থাকা সত্ত্বেও, ভোটার কার্ডে বাবার জায়গায় শ্বশুরের নাম। আবার কেউ মামাকেই বাবা দেখিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তুলে ফেলেছেন। বছর বছর ভোটও দিচ্ছেন। উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় ভোটার তালিকায় এমনই ভুরি ভুরি গরমিলের অভিযোগ উঠল। অভিযোগ, কলসুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৫৩ নম্বর বুথে ৯ জন শ্বশুরকে, বাবা বানিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন। একজনের ভোটার তালিকায় আবার মামাই হয়ে গেছেন বাবা।

এই বুথের ভোটার মনিরুল মোল্লা। তাঁর বাবা জীবিত থাকা সত্ত্বেও ভোটার তালিকায় অভিভাবক হিসেবে রয়েছে শ্বশুর আজগর গাজির নাম। আবার তাঁর বোনের স্বামী আবুল হোসেন মোল্লা ও ভাই আমিরুল মোল্লার অভিভাবকের নামও ভোটার তালিকায় আজগর গাজি ! দেগঙ্গার কলসুর ভোটার মনিরুল মোল্লা বলেন, "আজগর গাজি আমার শ্বশুর হয়। ওটা নামের ভুল এসেছিল। ওটা সংশোধন করেছি আমরা। আমার বাবার নাম আয়ুব মোল্লা। তিনি বেঁচে আছেন।" এই বুথেরই বাসিন্দা মুজিত মোল্লা আবার নিজের মুখেই কারচুপির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন,  পিতা তো আমার বহু আগে মারা গেছে। পিতা নেই তো। আমি তো একা। আমি তো অসহায়। বিয়ে করে আমার মামাকে বাবা বানিয়ে ভোটার হয়েছি।" 

Continues below advertisement

এ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তরুণকান্তি ঘোষ বলেন, "একেবারে আমরা দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি, টাকার বিনিময়ে এবং তৃণমূল পার্টির নেতাদের চাপে এই  কাণ্ডটা ঘটিয়েছেন। সেই কারণেই আমরা বারবার বলতে চাইছি, SIR অবশ্যই প্রয়োজন। সেই কারণেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধিতা করছেন SIR-এর। তার কারণ এসআইআর করলে এই সমস্ত ভূতুড়ে ভোটার বাদ চলে যাবে। তৃণমূলের পরাজয় অবশ্যম্ভাবী।" 

পাল্টা তৃণমূল দায় ঠেলেছে নির্বাচন কমিশনের ঘাড়ে। কলসুর পঞ্চায়েত প্রধান ও তৃণমূল নেত্রী মীরাতুন নাহার বলেন, "ভোটারের কাজের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব ছিল যাচাই করে তোলা। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। কারণ, এই কাজটা সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের।" কলসুর ২৫৩ নং বুথের BLO মুন্সি মোস্তাক আহমেদ বলেন, "অন্যান্য বলে একটা কলম আছে। সেখানে ওরা নামটা লিখেছে। বিডিও বললে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেব।" বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে ভোটার তালিকা ত্রুটিমুক্ত করা যাবে তো?