সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: জগদ্দলে শ্যুটআউটে (Shootout) মৃত্যু হয়েছে জুটমিল শ্রমিকের। খুনের ঘটনায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাকড়াও মূল অভিযুক্ত করণ। ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে ৩ জন।
বারবার গুলিচালনার ঘটনা ঘটছে উত্তর ২৪ পরগনায় (North 24 Pargana)। ভাটপাড়ার ঘটনার ১২ ঘণ্টা পরেই জগদ্দল। রাতে মদের আসরে পরিচিতর হাতে খুন হলেন ১৯ বছরের তরুণ। মৃত রোহিত দাস জগদ্দলের ২৬ নম্বর রেলগেটের কাছে শান্তিনিবাস পল্লির ঘটনা। পরিবারের দাবি, টিটাগড় জুটমিলের শ্রমিক রোহিত শনিবার রাতে কাজে যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বের হন। এর কিছুক্ষণ পরেই বাড়ির সামনে তাঁকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ওই তরুণকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
কবে এমন ঘটনা:
শনিবার রাতে, মদের আসরে, ১৯ বছরের তরুণকে গুলি করে খুনের অভিযোগ ওঠে তাঁরই বন্ধুদের বিরুদ্ধে। রোহিত দাস নামে এই তরুণের বাড়ি জগদ্দলের ২৬ নম্বর রেলগেটের কাছে শান্তিনিবাস পল্লি এলাকায়।
পরিবারের দাবি:
রোহিতের মায়ের দাবি, নাইট ডিউটি রয়েছে বলে, শনিবার রাতে বাড়ি থেকে বের হয় এই তরুণ। এর কিছুক্ষণের মধ্যে, বাড়ির সামনে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় রোহিতকে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে, তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিত্সকরা। ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় করণ যাদবের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন রোহিতের মা। তারপরেই গ্রেফতার হয়েছে করণ।
মৃতের প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, এখন ওদের পড়াশোনা করার কথা। সেখানে ওদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র আসছে কোথা থেকে? উত্স খুঁজে বের করুক প্রশাসন। দোষীদের শাস্তি দেওয়ার দাবি তুলেছেন পড়শিরা। তৃণমূল নেতা অর্জুন সিংহ বলেন, 'শুনেছি, মদ, জুয়ার ঠেক চলত। মাতালের মধ্যে গণ্ডগোল। পুলিশকে বলা হয়েছে দেখতে। এলাকার লোক কেন আতঙ্কে থাকবে? পুলিশের কাজ, পুলিশ দেখবে।'
পুলিশের দাবি:
ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, 'আজ ভোরে রোহিত দাসকে গুলি করা হয়েছে। প্রচুর আর্মস সিজ হয়েছে।' কিন্তু এত অস্ত্র আসছে কোথা থেকে? মনোজ বর্মা বলেন, 'বাইরে থেকে। বিহার, মুঙ্গের। ভাটপাড়ার ঘটনায় ২ জন অ্যারেস্ট হয়েছে। মোটিভ ক্লিয়ার নেই। তদন্ত করে দেখছি।'
সরব বিরোধীরা:
বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্যের ঘটনা, এতজন বিজেপি কর্মী খুন হয়েছে। অনেকে ভেবেছে, বিরোধীদের ঘরে আগুন লেগেছে। সর্বনাশ করেছে তৃণমূল। দুষ্কৃতীরা ভয় পায় না। নির্বাচনের সময় ওদেরকেই কাজে লাগিয়েছে। পুলিশের স্বাভাবিক তত্পরতা চোখে পড়ছে না। মুখ্যমন্ত্রী বলছে, ১৫ দিনের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। সেই ১৫দিন চলে গেছে।'
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, 'বোমাগুলি, বারুদ, জাল টাকা, নারী, শিশু, মাদক পাচার এসব নিয়েই আজকের বাংলা। অবনতির সাক্ষী হতে হচ্ছে আমাদের। তৃণমূল সরকার প্রশাসন পরিচালনা করতে ব্যর্থ। পুলিশ মন্ত্রী ব্যর্থ। লাগাতার গুলি, হত্যার ঘটনায় সেটাই প্রমাণিত হয়।'
পাল্টা কটাক্ষ তৃণমূলের:
তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, 'শমীক বলছেন, ওঁর উচিত অমিত শাহর সঙ্গে কথা বলা। কেন্দ্রের দায়িত্বে রয়েছে সীমান্ত। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন করুক। আমরা তো বলছি পুলিশ ব্যবস্থা নিক। আমরা কি বাম জমানা ভুলে যাব? লালবাজারের নাকের ডগায় আস্ত বাড়ি উড়ে গেল। পশ্চিম দিকের রাজ্য থেকে দু-একজনকে ঢুকছে। তাদের দিয়ে এসব করাচ্ছে।'
আরও পড়ুন: হার্টের টিউমার বাদ দিয়ে বসল যন্ত্র, রেকর্ড অক্ষত এসএসকেএমের