সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা:  বিধানসভা ভোটের মাসকয়েকের মধ্যেই ফুলবদল। রাজ্য চার বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনের আগে অস্বস্তি বিজেপির।  এবার বিজেপি ছাড়লেন বসিরহাটের বাবু মাস্টার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে উসকে দিলেন তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা। ভুল স্বীকার করে ফিরোজ কামাল গাজি ওরফে বাবু মাস্টারের দাবি, বিজেপিতে যাওয়া হঠকারী সিদ্ধান্ত। মতাদর্শ না মেলায় বিধানসভা ভোটের সময় নিষ্ক্রিয় থাকারও দাবি করেন বাবু মাস্টার। তিনি বলেছেন, ‘বিজেপির মতাদর্শের সঙ্গে আমার কোনও মিল নেই’ । 


গত বিধানসভা ভোটের আগে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন একদা তৃণমূলের এই নেতা। এর আগে সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন বাবু মাস্টার। ভোটের আগে কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে দলে এসেছিলেন, তা পূরণ না হওয়ায় দল ছেড়েছেন। বাবু মাস্টারের বিজেপি-ত্যাগ নিয়ে প্রতিক্রিয়া বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের।


বিধানসভা ভোটে বিজেপির হারের পর থেকে বসিরহাটের ফিরোজ কামাল গাজি ওরফে বাবু মাস্টারকে আর দলের কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছিল না। তখন থেকেই শুরু হয়েছিল জল্পনা। সেই জল্পনাই সত্যি হল বুধবার।


প্রার্থী নির্বাচন থেকে দলের নীতি-কর্মসূচি, সবকিছু নিয়েই ক্ষোভ উগরে দিয়ে বিজেপি ছাড়লেন বাবু মাস্টার।বললেন,  কাউকে জানাবার দরকার নেই। আজ থেকে বিজেপি ছেড়ে দিলাম। বিজেপির কোনও সিদ্ধান্তই ভাল লাগেনি। বসিরহাট একটা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা। কিন্তু এখানে বিধানসভা ভোটে একটাও সংখ্যালঘু প্রার্থী করেনি বিজেপি। জীবদ্দশায় আর বিজেপি করব না।


পেশায় বসিরহাটের ভবানীপুর সেন্ট্রাল মডেল হাইস্কুলের শিক্ষক ফিরোজ কামাল গাজি ওরফে বাবু মাস্টার প্রথমে সিপিএম করতেন। 


২০১১-র বিধানসভা ভোটে পালাবদলের পর সিপিএম ছেড়ে নাম লেখান তৃণমূলে।২০১৮ সালে হাসনাবাদ থেকে জেলা পরিষদের শিক্ষা, ক্রীড়া ও তথ্য সংস্কৃতি দফতরের কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন তিনি। কিন্তু ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের ফল বেরনোর পর বেসুরো হন বাবু মাস্টার। গত বছর ১৯ ডিসেম্বর, শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার দিনই পদ্ম শিবিরে নাম লেখান অর্জুন সিংহ ঘনিষ্ঠ এই নেতা। বিধানসভা ভোটে বিজেপির হয়ে প্রচারও করেন তিনি। 


ফেব্রুয়ারি মাসে মিনাখাঁয় বাসন্তী হাইওয়ের ওপর তাঁর ওপর প্রাণঘাতী হামলাও হয়। সেই বাবু মাস্টারই এদিন বিজেপি ছাড়ার কথা ঘোষণা করলেন।