সমীরণ পাল (উত্তর ২৪ পরগনা): ফের মোবাইল ফোনে গেম খেলতে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।  গতকাল উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর রোড ও গুমা স্টেশনের মধ্যে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক কিশোর ও এক তরুণের।  গতকাল সন্ধে ৬টা ৪৩ নাগাদ দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রে দাবি, দুজনেই ট্রেন লাইনে বসে মোবাইল ফোনে গেম খেলছিল। গেমে দুই জনেই এতটাই বুঁদ ছিল যে,   ডাউন ঠাকুরনগর লোকালের চালক বারবার হর্ন দিলেও তারা শুনতে পায়নি। মৃতদের একজন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।  এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। 


সচেনতামূলক প্রচার ধারাবাহিকভাবে প্রচার চললেও হুঁশ ফিরছে না। বারেবারেই এ ধরনের দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা সামনে এসেছে। গত অগাস্ট মাসেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সাক্ষী থেকেছিল উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া ব্লকের হাপতিয়াগছ গ্রাম পঞ্চায়েতের কনাগছ গ্রাম। ট্রেনে কাটা পড়ে একই সঙ্গে চার যুবকের মৃত্যু হয়েছিল।  ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া ব্লকের কনাগছ গ্রামের চার যুবক রাহুল সিংহ,সৌরভ সিংহ, প্রশান্ত সিংহ এবং রাহুল সিংহ প্রত্যেকেই চোপড়া এলাকা মোটর গ্যারাজের কর্মী ছিলেন।রাখিবন্ধন উৎসবের কারনে বোনের কাছে রাখী পড়তে চারজনই বাড়িতে এসেছিলেন। রাতে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটবে কেউ স্বপ্নেও ভাবেনি। সন্ধের পর এলাকার চার বন্ধু বাড়ি কাছে রেল লাইনের ধারে গিয়েছিল। ঘটনার পর কেউ কেউ জানিয়েছিলেন যে, মোবাইলে গেম খেলছিলেন তাঁরা। আবার কেউ বলেছিলেন, মোবাইলে গান শুনছিলেন তাঁরা। এই মোবাইলই তাদের জীবনকে শেষ করে দেবে এটা ভাবেনি রাহুল, প্রশান্ত, সৌরভরা। আচমকা পর পর দুটি ট্র্যকে চলে আসে দুটি আপ, ডাউন ট্রেন। আপ ট্রেন থেকে কোনওভাবে রক্ষা পেলেও এনজেপি-র দিক থেকে আসা আগরতলা দেওঘর ডাউন ট্রেনে পিষে দিয়ে যায় চার যুবককে। তিন মাইলের কাছে ট্রেনের চালক বিষয়টি বুঝতে পারেন। ট্রেনটি দাঁড় করিয়ে ট্রেনের চালক রেল দফতরের আধিকারিকদের বিষয়টি জানান।


এর আগে চোপড়ায় ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছিল দুই যুবকের। রেললাইন থেকে উদ্ধার হয় মোবাইল ফোন, হেডফোন। সন্ধে বেলা চোপড়ার ধূমডাঙ্গি এলাকায় ওই দুর্ঘটনা ঘটেছিল। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, রেললাইনের ওপর বসে হেডফোনে কথা বলছিলেন দুই যুবক। একইসময়ে আপ ও ডাউন লাইনে ট্রেন চলে আসার বিষয় আগেভাগে টের না পাওয়ায় তাঁরা সরে যেতে পারেননি। রেলের তরফে বারবার প্রচার সত্ত্বেও সাধারণ মানুষ যে সচেতন নন, এ ধরনের ঘটনায় আবারও তা প্রমাণ হল।