কলকাতা : ক্রমেই ভয়াবহ হচ্ছে কাবুলের পরিস্থিতি । একদিকে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর, গজনি গেট ধ্বংস করল তালিবান জঙ্গিরা। গুঁড়িয়ে দেওয়া হল গজনি গেট!! অন্যদিকে পঞ্জশিরে নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের প্রতিরোধের মুখে তালিবান। আন্দরাবে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে। কাবুল যখন জ্বলছে, তখন আফগানিস্তান থেকে জীবন হাতে করে বাড়ি ফিরলেন, উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর ৩ বাঙালি ও অশোকনগরের ১ জন।
কাবুল থেকে অশোকনগরের বাড়িতে ফিরেছেন অজয় মজুমদার। হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়ার পর কাবুলে যান। অজয়ও মার্কিন সেনার জন্য রান্না করতেন। তালিবান কাবুলের দখল নেওয়ার পর সেখানে আটকে পড়েন। ফিরে এলেন কেন ?এবিপি আনন্দকে জানালেন, পরিস্থিতি দিন দিন খারপ হচ্ছে, তাই চলে এসেছি।
এছাড়াও বনগাঁতে ফিরেছেন বিদ্যুত্ বিশ্বাস, পলাশ সরকার, ও প্রবীর সরকার। তিন জনই কাবুল বিমানবন্দরে মার্কিন সেনার কেটারিংয়ের কাজ করতেন। প্রত্যেকের মনেই এখনও টাটকা রক্তাক্ত কাবুলের স্মৃতি। কোনওক্রমে প্রাণ নিয়ে দেশে ফিরেছেন বা়ড়ির ছেলে. স্বস্তির নিশ্বাস পরিবারে। প্রবীর সরকার জানালেন, ' এর আগে ইরাকে তেল কোম্পানিতে কাজ করতেন। সে কারণে আফগানিস্তানে কাজ পেতে সমস্যা হয়নি। সমস্যা হল আফগানিস্তান থেকে বাড়ি ফিরতে।
আফগানিস্তানের পরিস্থিতি যে কতটা ভয়াবহ, তা উঠে এসেছে বিদ্যুত্ বিশ্বাসের কথায়। মার্কিন সেনার তরফে, মোটা টাকা দেওয়ার কথা বলা হলেও, প্রাণ বাঁচাতে দেশে ফিরেছেন বিদ্যুৎ। তিনি জানালেন, 'ক্রমাগত শুনতে পাচ্ছিলাম গুলির শব্দ। আতঙ্কিত হয়ে পড়ছিলাম। মার্কিন সেনা তাঁদের থেকে যাওয়ার জন্য বলে। মোটা টাকাও দেবে বলেছিল। জানিয়েছিল, ৫ হাজার ডলার দেবে...কিন্তু তাও থাকিনি '
অজয়-পলাশরা বাড়ি ফিরলেও, এখনও কাবুলে আটকে রয়েছেন বহু বাঙালি। তারা কবে বাড়ি ফিরবেন, অপেক্ষায় রয়েছে পরিবার। আপাতত নয়াদিল্লির একটাই লক্ষ্য, যেভাবেই হোক সেখানে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধার করে দেশে ফেরানো। সূত্রের খবর, কাবুল থেকে প্রতিদিন বিমান পরিষেবা চালু রাখার অনুমতি পেয়েছে ভারত। ফলে আফগানিস্তানে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধার প্রক্রিয়া আরও গতি পাবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তবে তালিবান শাসিত আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে আগামী বৃহস্পতিবার সর্বদল বৈঠক ডেকেছে মোদি সরকার। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে বিরোধী দলের নেতাদের জানাবেন বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। আফগানিস্তান নিয়ে ইতিমধ্যেই Cabinet Committee on Security বা CCS-এর বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।