সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগণা : করোনা আবহে অনেকদিন বন্ধ ছিল কাজ। কারণ গণ পরিবহণ ব্যবস্থায় লাগাম টানা হয় করোনা সংক্রমণে রাশ টানতে। গণপরিবহন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই অভিযোগ করেছিলেন, কার্যত লকডাউনে সংসার চালানো কঠিন হচ্ছে। করোনাকালে কর্মসঙ্কটে ভুগছেন অনেকেই। কিন্তু তারই মধ্যে কিছু মানুষ হারিয়ে ফেলেননি সততা। নিজের পরিশ্রমের উপরই ভরসা রাখেন তাঁরা। বিশ্বাস করেন, হঠত্ করে পেয়ে যাওয়া জিনিস চিরস্থায়ী হয় না। লোভের পরিণতি শেষ পর্যন্ত খারাপই হয়। এমনই মনের পরিচয় দিলেন বনগাঁর এক টোটো চালক। 

মঙ্গলবার রাতে বনগাঁ বাটার-মোড় সংলগ্ন এলাকা থেকে কয়েকজন যাত্রী টোটোয় ওঠেন।  বনগাঁ স্টেশনের কাছে তাঁরা নেমে যান এবং ভুল করে ফেলে যান টাকা ভর্তি ব্যাগ। কিছুক্ষণ পর ওই ব্যাগটি নজরে আসে টোটো চালকের । দেখেন ব্যাগে বেশ কিছু নোট। বুঝতে অসুবিধে হয়নি, এতে অনেক টাকা আছে। কিন্তু অন্যের টাকার দিকে তাকাতেও চাননি তিনি। বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করেই তিনি যযোগাযোগ করেন  টোটো ইউনিয়নের সঙ্গে । তিনিই বলেন. থানায় এই ঘটনার কথা জানাতে, যদি টাকা হারিয়ে কেউ অভিযোগ করে থাকেন, তাহলে হয়ত মালিককে ফিরিয়ে দেওয়া যেতে পারে টাকা। এতগুলো টাকা খুইয়ে মানুষের মনের যে কী অবস্থা হতে পারে বুঝতে পারছিলেন তিনি। 


ইতিমধ্যে খোয়া যাওয়া টাকার ব্যাগের মালিক বনগাঁ থানায়  জানান । তারপর খোঁজ পাওয়া যায় টাকার ব্যাগের । ছিল ২০ হাজার টাকা ! এতগুলো টাকা হারিয়ে গিয়েও ফেরত পেয়ে খুশিতে আত্মহারা ব্যাগের মালিক গোপাল সেন। আর  হারিয়ে যাওয়া ব্যাগ ফেরত দিয়ে খুশি টোটো চালক সমীর ঘোষও। হাতে হাতে তুলে দেওয়া হল টাকার ব্যাগ। 

সবমিলিয়ে এক আনন্দ ঘন মুহূর্তের সাক্ষী থাকল বনগাঁর টোটোচালক ইউনিয়ন। খোয়া যাওয়া টাকা ফিরিয়ে দিতে পেরে শুধু সমীর ঘোষই নন, খুশি সব টোটো চালকই।