সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: কেটে গেল দীর্ঘদিনের সমস্যা। এবার বাস্তব হবে সেতুর (Bridge) স্বপ্ন। জেলা প্রশাসন জানাচ্ছেন, দীর্ঘদিন ধরে থাকা জমিজট কেটে যাওয়ায় বাদুড়িয়ার লক্ষ্মীনাথপুরে ইছামতীর উপর তৈরি করা যাবে সেতু। কাজ শেষ হতে অন্তত বছর দেড়েক লাগবে।


উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) বাদুড়িয়ার লক্ষ্মীনাথপুর। এখানে মাঝ দিয়ে বয়ে চলেছে ইছামতী (Ichamati)। নদীর দু’পাড়েই জনবসতি। পড়়াশোনা থেকে কাজকর্ম, কিংবা হাসপাতাল। যে কোনও কাজের জন্য নদী পেরিয়ে বাদুড়িয়ার গ্রামীণ অংশ থেকে পুর এলাকায় যেতে হয় বাসিন্দাদের। প্রশাসনিক নানা কাজকর্মেও একই ছবি। এই সমস্যা সমাধানে, ইছামতীর ওপরে একটি সেতু তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। ২০১৭ সালে শুরু হয় কাজ। কিন্তু, বাধা হয়ে দাঁড়ায় জমির সমস্যা। জমিজটে আটকে যায় সেতু ও সংলগ্ন রাস্তা নির্মাণের কাজ।


সেতু না হওয়ায় প্রবল অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে সাধারণ বাসিন্দাদের। যেতে-আসতে অনেকটা সময় লেগে যাচ্ছে। আপৎকালীন সময়ে, যেমন হাসপাতালের ক্ষেত্রে খরচ হয়ে যাচ্ছে অনেকটা মূল্যবান সময়। ফলে দ্রুত সেতু তৈরির দাবি তুলেছিলেন  বাসিন্দারা। সমস্যা কাটিয়ে দ্রুত সেতুর কাজ শুরু করার দাবি তুলছিলেন এই এলাকার সাধারণ বাসিন্দারা।


কেন সমস্যা:
এই এলাকায় ৬ একর জমি রয়েছে একটি সংগঠনের। সেতুর কাজের জন্য সেখান থেকে বেশ কিছুটা জমি প্রয়োজন। ওই ৬ একরের মধ্যে সাড়ে চার একর জমি রাস্তা তৈরির জন্য দরকার। প্রশাসন সূত্রের খবর, সেই জমি নিয়েই জটিলতা শুরু হয়। 


অবশেষে সমাধান:
সমস্যা কাটাতে বুধবার, উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক, জেলা পরিষদের পূর্ত ও পরিবহণ দফতরের স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ, পিডব্লিউডির আধিকারিকরা, বাদুড়িয়া পুরসভায় বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে ছিলেন জমির মালিক ওই সংগঠনের প্রতিনিধিরাও। প্রশাসন সূত্রে খ‍বর, মোট ৬ একর জমি পুরোটাই অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  সংগঠনের তরফে ৮৭লক্ষ টাকার বেশি দাবি করা হয়, তা দিতেও সরকার রাজি হয়েছে। ফলে সমস্যা কেটে গিয়েছে বলেই জানিয়েছে প্রশাসন। 


প্রশাসনের বক্তব্য, এই ব্রিজ তৈরি হয়ে গেলে, বাদুড়িয়া থেকে স্বরূপনগর, সরফরাজপুর এই সব জায়গায় যাওয়া অনেক সহজ হয়ে যাবে। এমনকি ঘোজাডাঙা স্থলবন্দরেও অতি দ্রুত পৌঁছনো যাবে। সমস্য়া সমাধানের কথা জানিয়েছেন, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদে পূর্ত ও পরিবহণ দফতরের স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণ গোস্বামী। 


বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি তাপস ঘোষের অভিযোগ, 'শাসকদলের সদিচ্ছার অভাবে এতদিন ধরে কাজ হচ্ছিল না। আটকে ছিল।'


প্রশাসন সূত্রে খবর, নভেম্বর থেকে ফের শুরু হবে সেতু তৈরি। সেতুর কাজ শেষ হবে দেড় বছরে। জমি সমস্য়া মিটে যাওয়ায় দ্রুত কাজ চালু হোক, দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।


আরও পড়ুন: আর্থিক বিবাদের জেরে ব্যবসায়ীকে ‘হুমকি’, অভিযোগ অস্বীকার তৃণমূল বিধায়কের