সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: নিচুতলার নেতাকর্মীদের প্রস্তাব উপেক্ষা করে কেন তৃণমূল থেকে আসা বিশ্বজিৎ দাসকে বাগদায় প্রার্থী করা হয়েছিল? কেন আমল দেওয়া হয়নি স্থানীয় কর্মীদের কথায়? উত্তর ২৪ পরগনার বাগদায় সাংগঠনিক বৈঠক করতে গিয়ে প্রার্থী অসন্তোষ টের পেল বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
বাগদার স্থানীয় বিজেপি নেতার দাবি, 'আমাদের রিকোয়্যারমেন্ট আপনারা কখনোই অ্যাকসেপ্ট করেননি। এর দায় আপনাদের নিতে হবে। এর দায় আপনাদের নিয়ে আজকে এই মিটিংয়ের সমাপ্তি ঘোষণা করতে হবে।
রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের কথায়, 'সেই আশঙ্কার কথা বলা হয়েছিল। আপনাদের জানিয়ে রাখি। আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি রাজ্য থেকে সেই আশঙ্কার কথা সুষ্পষ্ট ভাবে নির্বাচনে টিকিট দেওয়ার যে কমিটি ছিল দিল্লিতে, তাদেরকে পরিষ্কার জানানো হয়েছিল। আপনাদের এখান থেকে যে কয়েকটি নামের তালিকা গিয়েছিল সেই তালিকাও দেওয়া হয়েছিল।'
বৃহস্পতিবার বাগদা বিধানসভার সাংগঠনিক বৈঠকে এভাবেই দলীয় নেতাকর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বকে। দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের সামনেই ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
৩১ অগাস্ট বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ যান বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। তারপর বাগদা বিধানসভায় দলের সাংগঠনিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বৃহস্পতিবার হেলেঞ্চায় বৈঠক ডেকেছিল বিজেপি। সেখানে বিশ্বজিৎ দাসকে বিধানসভা প্রার্থী করা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন গেরুয়া শিবিরের স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
২ নম্বর বাগদা মণ্ডল বিজেপি কর্মী সলিল বিশ্বাস, আমরা সাধারণ কর্মী। আমাদের কথা শুনছে না। তাহলে ভোট করবেন কীভাবে? এভাবে আমাদের দল কীভাবে চলবে? শৃঙ্খলা নেই। আগে যারা বিজেপি পার্টি করেছেন, তাদের টিকিট দেননি।
বিজেপির টিকিটে নির্বাচিত বাগদার বিধায়ক তৃণমূলে চলে যাওয়ার পর, দলের তরফে আয়োজিত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। অথচ সেখানেও দেখা যায়নি বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতিকে।
জয়প্রকাশ মজুমদার আরও বলেন, জয়ী প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস যে কোনও কারণেই হোক না কেন, ভয়ে চাপে লোভে তৃণমূলে যোগদান করেছেন। একদম বুথ লেভেল থেকে কার্যকর্তা এসেছেন। তাদেরকে বোঝানোর দায়িত্ব আমাদের। তাদের মনেও তো বেদনা আছে। রাজ্য থেকে এসেছি তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর জন্যে।
বাগদারতৃণমূল নেতা ও বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসের কথায়, আজ জয়প্রকাশবাবু বাগদা এসেছিলেন দলে ভাঙন ঠেকাতে। প্রথম সারির নেতৃত্বরা কেউ উপস্থিত হননি। যে উদ্দেশে এসেছিলেন ভাঙন ঠেকাতে, দলে ভাঙন হবেই। কারণ নেতৃত্ববিহীন। শৃঙ্খলা নেই। মানুষ কার কাছে যাবে। জেলা সভাপতি থেকে কেউ উপস্থিত হননি। আগামী দিনে ধরে রাখতে পারবেন না। সবমিলিয়ে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় বিজেপির ঘরে অস্বস্তি যেন বেড়েই চলেছে।