সমীরণ পাল, বনগাঁ: পুরবোর্ড গঠনের পরেই বনগাঁয় (Bongaon) প্রকাশ্যে তৃণমূলের দুই নেতার সংঘাত। পরাজিত কংগ্রেস প্রার্থীকে (Congress Candidate) নিয়ে দলেরই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে থানায় বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূলের (TMC) উপ পুরপ্রধান।
গতকাল বনগাঁর ৩ নম্বর ওয়ার্ডে কয়েকটি ক্লাবের মধ্যে দফায় দফায় গন্ডগোল হয়। অভিযোগ, বাড়িতে ঢুকে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি, মহিলাদের মারধর করা হয়। এরপরই পরাজিত কংগ্রেস প্রার্থী ও আত্মীয় মলয় আঢ্যকে নিয়ে থানায় যান উপ পুরপ্রধান জ্যোত্স্না আঢ্য। সেখানে দু’ পক্ষের মধ্যে ফের সংঘর্ষ বাধে। পুলিশের সঙ্গেও ধস্তাধস্তি হয়। এরপর থানার বাইরে শুরু হয় বিক্ষোভ। যা একসময় পৌঁছে যায় থানার ভিতরেও। উপ পুরপ্রধানের অভিযোগ, হামলার নেপথ্যে পুরপ্রধান গোপাল শেঠের অনুগামীরা। পুরপ্রধানের পাল্টা দাবি, কংগ্রেসের পরাজিত প্রার্থীকে নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানোর বিষয়টি দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানানো হবে।
পুরভোট মিটলেও অশান্তি থামার বালাই নেই উত্তর চব্বিশ পরগনার বনগাঁয়। সদ্য বনগাঁয় তৃণমূলের বোর্ড গঠন হয়েছে। তারপরেও একের পর এক গন্ডগোল। তুলকালামকাণ্ড থানাতেও। বনগাঁ থানার মধ্যে হাতাহাতিতে জড়াল দু’পক্ষ। বিক্ষোভ দেখালেন বনগাঁর ভাইস চেয়ারম্যান শাসক নেত্রী জ্যোৎস্না আঢ্য। থানা চত্বরে উঠল স্লোগান।
জ্যোৎস্না আঢ্য বলেন, “নিজেদের নিজেদের মধ্যে গন্ডগোল। গোপালদা কিন্তু দায়ী থাকে যেহেতু ওই ওয়ার্ড থেকে জিতেছে।‘’ ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পরাজিত কংগ্রেস প্রার্থী মলয় আঢ্যর কথায়, “আমার সমর্থনে যারা ছিল তাদের উপর অত্যাচার করছে। গোপালদার নাম নিয়ে বলছে তোদের দেখে নেব, বাড়িছাড়া করব।‘’ বনগাঁর প্রাক্তন চেয়ারম্যন শঙ্কর আঢ্যকে এবার প্রার্থী করেনি তৃণমূল। তাঁর মেয়ে ও ভাই, তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে কংগ্রেসের হয়ে ভোটে লড়েন। গন্ডগোলের জন্য নাম না করে দলের চেয়ারম্যানকে বিঁধেছেন তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্য। এবিষয়ে তিনি বলেন, “আমি জানি না তাঁর ইন্ধনে হচ্ছে কি না। কিন্তু বারবার তিন নম্বর ওয়ার্ডে গন্ডগোল হচ্ছে। বারবার এই ওয়ার্ড নিয়ে গন্ডগোল হলে দায়িত্ব জনপ্রতিনিধির। নিরপেক্ষ বিচার হোক।‘’ গোপাল শেঠের কথায়, “সেখানে কংগ্রেস ও ভাইস চেয়ারম্যান গিয়েছেন, যেটা আমাদের কাছে অবাঞ্চিত মনে হয়েছে সেটা দলকে জানিয়েছি। আমার সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল।‘’
তৃণমূলের দ্বন্দ্বেই অশান্তি বলে পাল্টা খোঁচা বিজেপির। বনগাঁ পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিজেপি কাউন্সিলর দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘একটা আছে কংগ্রেসের সঙ্গে। আরেকটা তৃণমূল। আমার কাছে খবর আছে পুলিশ ধাক্কা খেয়েছে। এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তিন নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বনগাঁর মানুষ আতঙ্কে আছেন।‘’ শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত গন্ডগোল চলে বনগাঁ থানায়। শেষপর্যন্ত পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।