সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: ভিন রাজ্যে ট্রেন থেকে পড়ে পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু (Accident)। দেহ ফিরল সীমান্তের গ্রামে। গ্রাম জুড়ে শোকের ছায়া। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪পরগনার (North 24 Parganas) বসিরহাটের স্বরূপনগর থানার কৈজুরী গ্রাম পঞ্চায়েতের ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ভাদুড়িয়া গ্রামে।


রাজমিস্ত্রির কাজ সেরে ট্রেনে করে বাসায় ফিরছিল কারিমূল


জানা গিয়েছে, বছর ২৮ এর কারিমূল ইসলাম গাজী গত ১০ বছর আগে মুম্বইতে রাজমিস্ত্রি কাজ করতে যায়। চলতি মাসে ২৮ জানুয়ারি রবিবার রাজমিস্ত্রির কাজ সেরে ট্রেনে করে বাসায় ফিরছিল কারিমূল। মুম্বই ভাইন্ডার স্টেশনের কাছে ট্রেন থেকে পড়ে ওই যুবকের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মৃতের পরিবারের মধ্যে। ঠিকাদার সংস্থার তরফ থেকে ফোনে জানানো মাত্রই  কান্নায় ভেঙে পড়েছে মৃত যুবকের পরিবারের আত্মীয়-স্বজন।


'ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু ? নাকি কেউ ধাক্কা মেরেছে?'


তাঁদের দাবি, ট্রেন থেকে হয়তো কেউ ধাক্কা মেরেছে। না হলে দীর্ঘ এক যুগ মুম্বইতে কাজ করার সুবাদে কি করে হঠাৎ ট্রেন থেকে পড়ে গেল কারিমূল ? এই পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠে গেছে। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে কারিমূল ইসলাম গাজীর কফিন বন্দী মৃত দেহ ভাদুড়িয়া গ্রামে পৌঁছাতেই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে পড়েছে। মৃতের পরিবারের দাবি, উপযুক্ত তদন্ত করুক প্রশাসন, যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু? না কেউ ধাক্কা মেরেছে? পরিযয়ী শ্রমিকের মৃত্যু নিয়ে একাধিক ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।


আগেও ভিনরাজ্যে বহু মৃত্যু পরিযায়ী শ্রমিকের 


গুজরাতে কাজ করতে গিয়ে 'গণপিটুনি'জেরে বাংলার ২ পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল। জানা গিয়েছিল, রাজকোটে গয়নার দোকানে কাজ করতে গিয়ে কালনার ২ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল (Death Mystery)। সেবারও অন্য অভিযোগ তুলেছিল পরিবার। ৪ মাসের বকেয়া মাইনে চাওয়ায় পিটিয়ে খুনের অভিযোগ এনেছিল মৃতের পরিবার। বকেয়া বেতন চাওয়ায় চুরির অপবাদে গুদামে নিয়ে গিয়ে কালনার কৃষ্ণদেবপুরের রাহুল শেখ, সুমন শেখকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। 


আরও পড়ুন, 'সামনে আমার বাজেট..', রাজ্যবাসীকে কী বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর ?


বাংলায় কর্মশূন্যতাই কি ভিনরাজ্যের দিকে পা বাড়াতে বাধ্য করছে রাজ্যের শ্রমিকদের? মিজোরামে নির্মীয়মাণ রেলসেতু ভেঙে মালদার ২৩ পরিযায়ী শ্রমিকের (Migrant Workers) মৃত্যুর ঘটনায় শুরু হয়েছিল তরজা। তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিল বিরোধীরা। পাল্টা উত্তর দিয়েছিল শাসকদল। মিজোরামে নির্মীয়মাণ রেল সেতু ভেঙে মৃত্যু হয়েছিল মালদার ২৩ জন পরিযায়ী শ্রমিক। আর তারপর থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছিল, কী কারণে ভিনরাজ্যে কাজের খোঁজে যেতে হয় বাংলার শ্রমিকদের? তাহলে কি বাংলায় কাজের খোঁজ নেই? আর এইসব প্রশ্নকে সামনে রেখেই রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে বারবার কাঠগড়ায় তুলেছে বিরোধীরা।