সমীরণ পাল, গোবরডাঙা: উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) গোবরডাঙায় (Gobordanga) তৃণমূলের (Trinamool) এক অঞ্চল সভাপতিকে কোপানোর অভিযোগ উঠল তাঁরই খুড়তুতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের বেড়গুম ২ নম্বর অঞ্চলের সভাপতি কল্যাণ দত্তকে গুরুতর আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে।


তৃণমূল নেতাকে কোপানোর অভিযোগ: গতকাল রাতে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে দাবি, বেআইনিভাবে পুকুর ভরাটের প্রতিবাদ করেছিলেন ওই তৃণমূল নেতা (TMC Leader)। সেই নিয়ে বচসার জেরেই তাঁকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার পর থেকেই কল্যাণের খুড়তুতো ভাই জয়দীপ দত্ত পলাতক। গোবরডাঙা থানায় (Gobordanga Police Station) দায়ের হয়েছে অভিযোগ।  ঘটনার প্রতিবাদে বসিরহাট রোড অবরোধ করেন তৃণমূলের নেতা কর্মীরা।  ঘটনাস্থলে গিয়ে হাবড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অজিত সাহা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ ঘটনা ঘটলে অভিযুক্তদের ধরতে পারছে না। পুলিশ আশ্বাস দেয়, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হবে। তারপর অবরোধ ওঠে।   


রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে তৃণমূলের উপপ্রধান খুন। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই পর পর বাড়িতে আগুন।  জীবন্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে ৯ জনের মৃত্যু। রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে বালি-পাথরের অবৈধ কারবারের তত্ত্ব সামনে আসছে। যা নিয়ে এখনও উত্তাল রয়েছে রাজ্য-রাজনীতি। তার মধ্যেই, এবার উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙায় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিকে খুনের চেষ্টা করা হল। স্থানীয় সূত্রে দাবি, বেআইনিভাবে পুকুর ভরাটের প্রতিবাদ করেছিলেন তৃণমূল নেতা কল্যাণ দত্ত। সেই নিয়ে বচসার জেরেই তাঁকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়।


বিজেপির বিরুদ্ধে সরব তৃণমূল: এবিষয়ে মন্ত্রী ও তৃণমূল বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “গতকাল রাতে কোপানো হয়েছে। পায়ে, মাথায়, কোমড়ে, পেটে আঘাত করা হয়। বিজেপির অভ্যাস হয়ে গেছে এটা দাবি করা যে,  বিজেপির কর্মীরা কেউ মারা গেলে, সেটা তৃণমূল মেরেছে,  সিবিআই হবে। আর তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী বিজেপির হাতে মারা গেলে সেটা তৃণমূলের কলহ করছে। শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার এই দুজন বাংলাকে উত্তপ্ত করছে। বাংলার ভাল চাইলে মুখো লিকোপ্লাস্ট মেরে বসে থাকুন।‘’ বৃহস্পতিবার সকালে বসিরহাট রোড অবরোধ করেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন হাবড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। হাবড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল নেতা ও সভাপতি অজিত সাহা বলেন, “২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার না করলে, থানা ঘেরাও করব। একটার পর পর তৃণমূলের কর্মী খুন হবে, আক্রমণ হবে, শুধু তাদের অনৈতিক কাজে বাধা দেওয়ার জন্য। বিজেপি যা করছে তা বরদাস্ত করব না।‘’


কটাক্ষ বিজেপির:  তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় বিজেপির বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠেছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল বলেন, “গোবরডাঙায় যাঁকে কুপিয়েছেন তিনি তৃণমূল, যিনি কুপিয়েছেন তিনিও তৃণমূল। এখন তৃণমূল, তৃণমূলকে মারছে।‘’ ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রে দাবি, পুকুর ভরাট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটা পারিবারিক গন্ডগোল ছিল। তার জেরেই হামলা বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে।


আরও পড়ুন: Anubrata Mondal: ‘আনারুলকে আগেই পদ থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিলাম’, বিস্ফোরক দাবি অনুব্রতের