সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: এ যেন একেবারে সিনেমার মতো ঘটনা। অসহায় পাত্রীকে বিয়ে করে নিজেরই সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীর নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে হল যুবককে। আর তাঁরই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গ্রেফতার করল নববধূকে। প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া নববধূকে এদিন বনগাঁ মহকুমা আদালতে পাঠায় বাগদা (Bagda) থানার পুলিশ।
প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার নববধূ-
জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) বাগদা গ্রাম পঞ্চায়েতের দেয়ালদহ গ্রামের যুবক সঞ্জিত পালের বিবাহের জন্য দেখাশোনা চলছিল। গত ২০ এপ্রিল চাকদহ থেকে শান্তি বিশ্বাস নামে এক মহিলা ঘটক এবং রাখি বিশ্বাস নামে পাত্রীকে সঙ্গে নিয়ে পাত্রের বাড়িতে আসেন। পাত্রীর পরিবার প্রসঙ্গে ওই মহিলা জানান যে, পাত্রী রাখি বিশ্বাসের মা নেই, তার বাবা পাগল। এবং পরিবারের কারও সঙ্গেই যোগাযোগ নেই তার। খুবই অসহায় পাত্রী। জানা যায়, সঞ্জিত পালের পরিবারের সদস্য়রা পাত্রীর অসহায়তার কথা শুনে সেদিনই বিয়ের ব্যবস্থা করেন। গত ২৩ এপ্রিল রবিবার প্রতিবেশীদের নিমন্ত্রণ করে বৌভাতেরও আয়োজন করেছিল সঞ্জিতের পরিবার।
পাত্রের পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, বিয়ের পর থেকেই নববধূর আচরণ তাঁদের খুব একটা সুবিধের মনে হয়নি। সদ্য বিবাহিতা বধূর আচরণে অনেক অসংগতি পাচ্ছিলেন তাঁরা। তাঁরা আরও জানাচ্ছেন, বৃহস্পতিবার হঠাতই নববধূ জানান যে তিনি চাকদহতে যাবেন ডাক্তার দেখানোর জন্য। কিন্তু গোলমাল বাধে, যখন নববধূ ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার সময় বিয়েতে পাওয়া গয়না নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখনই সন্দেহ হয় সঞ্জিত পাল এবং তাঁর পরিবারের লোকেদের। তারা নববধূকে জেরা করতে থাকেন। আর তারপরই চোখ কপালে তুলে দেওয়ার মতো তথ্য সামনে আসে। রাখি বিশ্বাস নামে ওই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানতে পেরেছেন যে, সঞ্জিতের আগে আরও একাধিক বিয়ে হয়েছে তার। বিয়ে করে একাধিক জায়গা থেকে সম্পত্তি হাতানোর অভিযোগ এর আগেও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। সমস্ত ঘটনা জানার পরই নিজের সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীর নামে বাগদা থানায় প্রতারণার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সঞ্জিত পাল। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় ওই মহিলাকে। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত নববধূ রাখি বিশ্বাসের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা রুজু করে এদিন বনগাঁ মহকুমা আদালতে পাঠায় বাগদা থানার পুলিশ। পাশাপাশি গোটা ঘটনার তদন্ত করছেন তাঁরা। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।