উত্তর ২৪ পরগনা: অনুপম দত্ত খুনে 'মূল ষড়যন্ত্রীর' জামিন মিলতেই নিরাপত্তাহীনতায় খোদ তৃণমূল কাউন্সিলর মীনাক্ষী দত্ত। পানিহাটির তৃণমূল কাউন্সিলর অনুপম দত্ত খুনে (Anupam Dutta Murder Case) 'মূল ষড়যন্ত্রীর' জামিন হতেই বিস্ফোরক মৃতের পরিবার। চার্জশিট নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তোলা হয়েছে। নিহত কাউন্সিলরের স্ত্রী, সন্তান-সহ গোটা পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ্যে এসেছে।
চার্জশিট নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ
নিহত কাউন্সিলরের স্ত্রী মীনাক্ষী দত্ত এদিন বলেন, 'একটা মানুষ যদি একটা মানুষকে মেরে দিয়ে এভাবে হঠাৎ বেরিয়ে যায়, তাহলে আমার কথা আপনি পরে ভাববেন, কোন মানুষ আজ নিরাপদে আছে ? নিরাপদে তো কেউ নেই তাহলে। পুলিশের উপর এতদিন ভরসা রেখেছিলাম। এখনও আছি , দেখা যাক কী হয়।' উচ্চতর তদন্তের দাবি জানাতে চান কিনা প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'অবশ্যই আরও ভালভাবে যেনও তদন্ত হয়।'
'কীভাবে হাইকোর্টে জামিন মিলল ?'
নিহত কাউন্সিলরের ভাই নিরুপম দত্তর দাবি, খুনের ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ রয়েছে। পুলিশের কাছে খুনের কথা কবুলও করেছে খুনি। গোটা ঘটনায় মূল ষড়যন্ত্রী বাপি পণ্ডিতের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। এরপরও কীভাবে হাইকোর্টে জামিন মিলল ? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে নিহতের পরিবার। পরিবারের দাবি, খুনে অভিযুক্তের জামিনের খবর মেলার পরেই দুই সন্তানকে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন অনুপম দত্তর স্ত্রী ও পানিহাটির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মীনাক্ষী দত্ত। তারপরেই তাঁকে সাগর দত্ত মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে চিকিৎসাধীন মীনাক্ষীর শারীরিক অবস্থা এই মুহূর্তে স্থিতিশীল বলেই জানিয়েছে পরিবার।
অনুপম দত্ত খুনের পর পানিহাটির ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটে পদপ্রার্থী হন স্ত্রী মীনাক্ষী দত্ত
প্রসঙ্গত, বাইশের প্রেক্ষাপটে যেকটি 'রাজনৈতিক খুন হয়েছে', তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি জল ঘোলা হয়ে পানিহাটি এবং ঝালদা নিয়ে। এর মধ্যে পানিহাটিতে খুন হন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অনুপম দত্ত। যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত চলছে। অনুপম দত্ত হত্যাকাণ্ডের পরেই স্বাভাবিকভাবেই অভিযোগ আঙুল ওঠে অনেকের দিকেই। তবে উপনির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর পানিহাটির ৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কাউন্সিলর অনুপম দত্তের স্ত্রী মীনাক্ষী দত্তকেই ঘাসফুলের তরফে পদপ্রার্থী করা হয়। আর ২২৭৪ ভোটে জয়ী হন নিহত তৃণমূল কাউন্সিলর অনুপম দত্তের স্ত্রী মীনাক্ষী দত্ত।
আরও পড়ুন, কত চাকরি হয়েছে ? কত বাকি ? পরিসংখ্যান চেয়ে বামেদের নিশানা মমতার
'আমি শুধু ওর দেখানো পথে চলব'
উল্লেখ্য, অনুপমের মৃত্যুর পরেই তিনি বলেছিলেন, 'রাজনীতিতে আসবেন, স্বামীর দেখানো পথেই হাঁটবেন।' জয়ের পর তিনি এবিপি আনন্দকে জানিয়েছিলেন, 'এই জয়টা অনুপমের জয়। আমি শুধু ওর দেখানো পথে চলব।' যদিও সেই কথা মতোই এগিয়ে চলছিলেন মীনাক্ষী, তবে স্বামীর খুনে 'মূল ষড়যন্ত্রীর' জামিন মিলতেই পরিস্থিতি অন্যদিকে গড়াল।