পার্থপ্রতিম ঘোষ ও ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, সন্দেশখালি: ক্ষোভে ফুঁসছে সন্দেশখালি। দুই মন্ত্রী ফিরে যেতেই শেখ শাহজাহানের গ্রেফতার (Poster For Sheikh Shahjahan Arrest) চেয়ে ফের পড়ল পোস্টার। খুলনা ফেরিঘাট এলাকা, কর্ণখালি এলাকায় এদিন একাধিক পোস্টার দেখা যায়। গতকাল এই এলাকাতেই গিয়েছিলেন পার্থ ভৌমিক ও সুজিত বসু। মন্ত্রীদের সামনে ক্ষোভ উগরে দেন সন্দেশখালির বাসিন্দারা। মন্ত্রীরা ফিরতেই শেখ শাহজাহানের গ্রেফতার চেয়ে পড়ল পোস্টার। 
 
পরিস্থিতি...
কাটছে দিন, কিন্তু এখনও হদিস নেই শেখ শাহজাহানের। দাদা শেখ শাহজাহানের পর ভাই সিরাজেরও একের পর এক 'কীর্তি' ফাঁস। তাঁর বিরুদ্ধে সরব একের পর এক গ্রামবাসী। জমি দখল করে শুধু ভেড়ি নয়, আস্ত মার্কেটও সিরাজের নামে! 'দিনের পর দিন অত্যাচার, সহ্য করতে হয়েছে মুখ বুজে। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলেও লাভ হয়নি। পুলিশ সিরাজ বা শেখ শাহজাহান বাহিনীর কাছেই পাঠিয়েছে' , বিস্ফোরক অভিযোগ গ্রামবাসীদের। এমন পরিস্থিতিতে সন্দেশখালির ছবি গত কয়েকদিনে খুব একটা বদলানোর লক্ষণ নেই। বিশেষত, গত ২ দিন ধরে ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে সন্দেশখালির বেড়মজুর। একের পর এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে হামলা করেছেন ক্রুদ্ধ গ্রামবাসীরা। ঝাঁটা-লাঠি নিয়ে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখিয়েছেন মহিলারা। অন্যদিকে, শুক্রবারের পর আজ ফের গ্রামবাসীদের রোষের মুখে বেড়মজুরের অজিত মাইতি। লাঠি-ঝাঁটা নিয়ে তাড়া মহিলাদের। পালিয়ে অন্যের বাড়িতে ঢুকলেন তৃণমূল নেতা। শাসক নেতার গ্রেফতারির দাবিতে বাইরে বিক্ষোভ মহিলাদের। পুলিশের সঙ্গে বচসা, ধস্তাধস্তি।


ক্ষোভে ফুঁসে উঠলেন মহিলা বিক্ষোভকারী
গত কাল, শনিবার, ক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়েছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রীও। কিন্তু নিজেরাই ক্ষোভের মুখে পড়েন। 'শেখ শাহজাহান-সিরাজউদ্দিনের গ্রেফতারি চাই', এই একটি দাবিতে এখন অনড় গ্রামবাসীরা। তার মধ্যে আবার পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভে উগরে দেওয়া এক মহিলার ভিডিও  চারদিকে আলোড়ন ফেলে দেয়। দেখা যায়, এক পুলিশকর্মীকে সখেদে প্রশ্ন করছেন তিনি, 'উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারেনি। কেন পারেনি? এই সন্দেশখালি পুলিশের জন্য তো? গত বার যে মারপিট হয়েছিল, তখন সন্দেশখালি পুলিশ থাকলে আমাদের কি মাঠেঘাটে লুকোতে হত?'  ওই পুলিশকর্মীর বক্তব্য, শেখ শাহজাহানকে খোঁজা হচ্ছে। কিন্তু বিক্ষুব্ধ মহিলার প্রশ্ন একটাই, সন্দেশখালির পুলিশ কী করছে? এখানেই শেষ নয়। ওই মহিলার বক্তব্য, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৫০০ টাকা, হাজার টাকা দিচ্ছেন আর বলছেন মহিলারা চুপ করে বসে থাকুন।' তুমুল ক্ষোভ থেকে রাগত চ্যালেঞ্জও শোনা যায় তাঁর মুখে। বলেন, 'আপনার শাঁখা-চুড়ি পরে বসে থাকুন, আর পুলিশের দায়িত্বটা আমাদের দিয়ে দিন।' তাঁর বক্তব্য, দায়িত্ব পেলে এত দিনে তাঁরাই শেখ শাহজাহানকে খুঁজে বের করে ফেলতেন।


আরও পড়ুন:'উনি কী ভাবে লুকিয়েছিলেন, সেই ট্রেনিংই দিতে যান', ডিজি-র মাঝরাতের সফর নিয়ে মত দিলীপের