সমীরণ পাল এবং রঞ্জিত হালদার, উত্তর ২৪ পরগনা: পঞ্চায়েত ভোটের আগে সমুদ্রের কথা মনে করালেন কি আইএসএফ বিধায়ক নৌশাদ (ISF Leader Nawsad Siddique) ? রামনবমীর (Rama Navami) মিছিল ঘিরে হাওড়ার পর 'অশান্ত' হুগলির রিষড়া। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিজেপির শীর্ষ নেতাদের নিশানার মুখে রাজ্যের শাসকদল। শুভেন্দু-দিলীপ-সুকান্তদের তোপের মুখে 'তৃণমূলনেত্রী।' রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাও (JP Nadda) এনিয়ে ফোনে খবর নিয়েছেন। এদিকে গত কয়েকদিন আগেই তিলজলার শিশুমৃত্যু ঘিরেও উত্তাল হয়েছিল এশহর। আরেকটু পিছিয়ে গেলে সদ্য পুরনো অশান্তি ছড়ানোর ঘটনার তালিকায় জ্বলজ্বল করছে ভাঙড়কাণ্ড । যার আঁচ এসে পড়েছিল কলকাতাতেও।


'দায়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়'


সেবার গ্রেফতার হয়েছিলেন নৌশাদ সিদ্দিকি। পাশে থাকার বার্তা নিয়ে শুভেন্দু বলেছিলেন, 'ওর প্রতি আমাদের সহানুভূতি -সমর্থন আছে।' এবং সেবার ভাঙড়কাণ্ডে ,তৃণমূল সুপ্রিমোকেই দায়ী করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা (Suvendu Adhikari) ।  আর এবার পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফেরালেন কি সেই ঋণ ? রিষড়া ইস্যুকে সামনে রেখে বিজেপি নেতাদের পর একধাপ এগিয়ে নৌশাদ বললেন, 'এই জন্য দায়ী পুলিশ মন্ত্রী অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।' 


৪২ দিন জেল খাটার পরে দেগঙ্গাতে নৌশাদ


প্রসঙ্গত, ৪২ দিন জেল খাটার পরে দেগঙ্গাতে প্রথম পা দিয়েছেন নৌশাদ সিদ্দিকি। আর ভাঙড়ের বিধায়কের উপস্থিতিতেইআইএসএফের কর্মীসভা পরিণত হল জনসভায়। দেগঙ্গার চৌরাশি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আইএসএফের পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে এই কর্মীসভা ছিল। এই কর্মী সভায় উপস্থিত হন আইএসএফ বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি। আর এই খবর ছড়িয়ে পড়তে হাজার হাজার মানুষ আইএসএফ-এর কর্মী সভায় ভিড় জমায়।


'সজাগ ছিল না' কেউ ?


কর্মী সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে নওশা সিদ্দিকি বলেন, 'হাওড়ার ঘটনার পরে রিষড়া। বারবার মিছিল ঘিরে অশান্তি এটা ভয় দেখানোর রাজনীতি অর্থাৎ বাইনারি পলিটিক্স করার চেষ্টা চলছে। হাওড়ার ঘটনার পরে পুলিশ প্রশাসন আইবি-র সজাগ থাকা দরকার ছিল। কিন্তু তারা মনে হয় সজাগ ছিল না, তাই একের পর এক ঘটনা ঘটছে।'


'দায়ী মুখ্যমন্ত্রী'


নৌশাদ আরও বলেন,' এর দায় নিতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। নবান্নের দোরগোড়ায় এই ধরনের ঘটনা ঘটে যায়, তাহলে প্রত্যন্ত গ্রামবাংলা এই ঘটনা ঘটলে রাজ্য প্রশাসন কীভাবে সামাল দেবে। তাই এই সমস্তের জন্যে দায়ী পুলিশ মন্ত্রী অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাধারণ মানুষকে এই ধরনের ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। পাশাপাশি, নৌশাদ আরও বলেন,'ISF- র বাড়বাড়ন্ত দেখে তৃণমূল ভয় পেয়েছে। ২০১৮ সালে ISF মাঠে ছিল না। এবার কিন্তু মাঠে আছে। বসিরহাট খোলাপোতায় ISF -এর কর্মী সভায়।'


 মূল আকর্ষণ ছিলেন নৌশাদ 


 আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে আজ বসিরহাট দুনম্বর ব্লকের খোলাপোতায় একটি অনুষ্ঠান বাড়িতে ISF এর কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়।বসিরহাট এক ও দু নম্বর ব্লক, বাদুড়িয়া ও হাড়োয়া থেকে এই কর্মী সভায় যোগ দেন ISF এর নেতা কর্মীরা। এই কর্মী সভায় মধ্যমণি ছিলেন ISF এর একমাত্র বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। তিনি নেতা কর্মীদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।


আরও পড়ুন, 'NRC-র ভয় দেখিয়ে ক্ষমতায় মমতা', রিষড়াকাণ্ডের পর কেন বললেন শুভেন্দু ?


'শাসকদল, তাকে বিজেপির এজেন্ট বলছে'


'শাসকদল, তাকে বিজেপির এজেন্ট বলছে' সাংবাদিকের এই প্রশ্নের উত্তরে, তিনি হেসে বলেন,' ভয়ে আতঙ্কে তৃণমূল এ সব বলছে। তৃণমূল তো রাজনৈতিক ভাবে প্রতিহত করতে পারছে না। তাই আমদের সম্পর্কে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে। এমন কোনও প্রমান দিতে পারবে না, যে ISF এর সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক আছে। উল্টে মখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সঙ্গে সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর কী সম্পর্ক, তা সবাই জানে। আসামের মুখ্যমন্ত্রীকে দার্জিলিঙে নিয়ে গিয়ে চা খাওয়ানো, তৃণমূল- বিজেপি একসঙ্গে রামনবমী পালন, প্রধানমন্ত্রীকে চাদর পাঠানো। আসলে ISF এর  বাড়বাড়ন্ত দেখে তৃণমূল ভয় পাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ISF মাঠে ছিল না। আর এবার ২০২৩ সালে ISF মাঠে আছে।'