নয়াদিল্লি: 'বাড়ি বাড়ি গিয়ে মমতার গুন্ডারা হিন্দু পরিবারের অল্পবয়সী মেয়েদের ধর্ষণ করছে', সন্দেশখালির (Sandeshkhali Incident) পরিস্থিতি নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির (Union Minister Smriti Irani)। সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে আরও দাবি করেন স্মৃতি। তাঁর মতে, 'বাড়ি বাড়ি গিয়ে তৃণমূলেরা গুন্ডারা দেখে আসে, কাদের বাড়ির মেয়ে সুন্দরী, কোন মেয়েদের বয়স কম। তাঁদের স্বামীদের বলা হয়, স্বামী হলেও তাঁঁদের কোনও অধিকার নেই।' সংবাদমাধ্যমের কাছে গ্রামের মহিলারাই এই ধরনের অভিযোগ করেছেন জানিয়ে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রীর সংযোজন, 'যতক্ষণ তাদের মন না ভরবে, ততক্ষণ ওই মহিলাদের রেহাই নেই।' আমেঠির বিজেপি সাংসদের মতে, 'হিন্দু পরিবারের মেয়েদের ধর্ষণের জন্য চিহ্নিত করা হত... এরা সবাই তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের লোক।' অথচ এই ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কোনও তথ্য নেই, কটাক্ষ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
আর কী?
ইডি আধিকারিকদের উপর আক্রমণের ঘটনার পর এখনও অধরা অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। অন্য দিকে জনরোষের বিস্ফোরণে গত কয়েক দিন ধরে উত্তাল এলাকা। এসবের মধ্য়ে, সোমবার সন্দেশখালি পৌঁছন রাজ্য়পাল সি ভি আনন্দ বোস। সূত্রের খবর, ঘটনায় রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করেন তিনি। কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে কথাও বলেন সি ভি আনন্দ বোস। এর মধ্যে স্মৃতি ইরানির তীব্র আক্রমণে তীব্র আলোড়ন তৈরি হয়েছে। হিন্দু মহিলাদের উপর নিপীড়নের অভিযোগের কথা বলে কেন্দ্রীর মন্ত্রীর বক্তব্য, 'সন্দেশখালির হিন্দু পরিবারের বিবাহিতা মহিলারা এতদিন ধরে অত্যাচারের কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন। মহিলারা বলেছেন, এই ধরনের ঘটনা পুলিশের সামনেই ঘটেছে। রাজ্যপাল জানিয়েছেন, তিনি সংবিধান মেনে যা ব্যবস্থা নেওয়ার তিনি নেবেন।' তবে একই সঙ্গে সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, 'প্রশ্ন করুন কোথায় শেখ শাহজাহান।'
প্রেক্ষাপট...
সন্দেশখালিকাণ্ডে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ দাবি করে গত শনিবারই বিধানসভা থেকে রাজভবন পর্যন্ত প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল করেছিলেন বিজেপি বিধায়করা। তার নেতৃত্বে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। 'সন্দেশখালি জ্বলছে কেন, রাজ্যপাল জবাব দাও', 'সন্দেশখালি জ্বলছে, মমতা হাসছে' জাতীয় স্লোগান ছিল তাঁদের মুখে। রাজ্যপাল ছাড়াও জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, জাতীয় মহিলা কমিশন, জাতীয় তফশিলি জাতি কমিশন এবং জাতীয় তফশিলি উপজাতি কমিশনে আপিল জানানো হয়েছে বলে পরে দাবি করেন শুভেন্দু। সঙ্গে বলেন, 'রাজ্যপালকে ২৪ ঘণ্টা সময় দিলাম। আগামীকালের মধ্য়ে শান্তি ফেরাতে না পারলে, তফশিলি জাতি ও উপজাতিদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করতে পারলে সোমবার আমরা ১৪৪ ধারা ভাঙব। কত ক্ষমতা আছে, গ্রেফতার করে দেখান', চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক। এর পর, আজই সন্দেশখালি-সফর রাজ্যপালের। তীব্র সমালোচনা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরও।