সমীরণ পাল, দেগঙ্গা : জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক। তাও আবার ২ বছর পর স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে জীবন। তারই মধ্যে অফলাইনে মাধ্যমিক পরীক্ষ। সেই পরীক্ষা দিতে এসেই বাধার সম্মুখীন হলেন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন দুই মাধ্যমিক ছাত্র। স্কুল কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন ।
দুই মাধ্যমিক ছাত্র দীপায়ন দাস ও আমিনুর সর্দার। দুজনেই দেগঙ্গার রামনগরের বাসিন্দা। হাদিপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। দুজনেই চোখে দেখতে পান না । দৃষ্টিহীন দুই ছাত্রের মাধ্যমিকের পরীক্ষার সেন্টার পড়েছে বেড়াচাঁপা দেউলিয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।
সোমবার থেকে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা । এই দুই বিশেষ ভাবে সক্ষম ছাত্রকে রাইটার ছাড়াই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হয়। ফলে তারা কোনও কিছুই লিখতে পারে না। দুজনেরই স্বপ্ন ছিল উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হবে। কিন্তু জীবনের প্রথম পরীক্ষাতেই বিপত্তি ঘটেছে। তাদের সাহায্য করতে কেউই এগিয়ে আসেনি।
আমিনুর ও দীপায়নের মা স্কুল কর্তৃপক্ষের উপর দায় চাপিয়েছেন । তাঁরা জানিয়েছেন দৃষ্টিহীন ছেলেদের স্বপ্ন ছিল উচ্চ শিক্ষকায় শিক্ষিত হবে , তা একেবারে মাটি হতে চলেছে। এদিকে এই সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে হাদিপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম, তিনি বলেন আমিনুর সর্দার এবং দীপায়ন দাস , দুই ছাত্রই মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হওয়ার পরই বাবা-মাকে রাইটার এর জন্য বলা হয়। কিন্তু তাঁরা স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনো রকম যোগাযোগ করেনি। মাধ্যমিকের শিক্ষা পর্ষদের নিয়ম অনুযায়ী কোনও রাইটারে নাম পাঠানো সম্ভব হয়নি । তারা রাইটার ছাড়াই পরীক্ষা দিতে হয় । প্রধান শিক্ষকও ছাত্রের অভিভাবক এর উপর দোষ চাপিয়েছেন ।
সোমবার শুরু হয় মাধ্যমিক পরীক্ষা। প্রথম ভাষার পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে মোটের উপর সন্তুষ্টই পড়ুয়ারা। তবে ২ বছর পর মাধ্যমিকের শুরুর দিনই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা নিয়ে বিতর্ক রাজনৈতিক মাত্রা পেয়েছে। আগামী ২ থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সময়ও স্পৰ্শকাতর এলাকায় বন্ধ থাকবে ইন্টারনেট। স্পর্শকাতর পরীক্ষাকেন্দ্রের তালিকা পাঠানো হচ্ছে প্রশাসনকে।