সমীরণ পাল, বসিরহাট, উত্তর ২৪ পরগনা: মঞ্চে বসে রয়েছেন দলের সভাপতি। সেই মঞ্চেই বসে রয়েছেন দলের সাংগঠনির জেলার চেয়ারম্যানও। সেখানেই বিস্ফোরক তৃণমূলের নেতা। দলের এখটি অংশের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিলেন উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট টাউন তৃণমূলের সভাপতি অভিজিৎ ঘোষ। যা ঘিরে শোরগোল পড়েছে দলের অন্দরে।      

  


কী বলেছেন ওই নেতা?
বসিরহাট টাউন তৃণমূলের সভাপতি অভিজিৎ ঘোষ বলেন, 'আমার দুই নেতা জেলার প্রেসিডেন্ট এবং চেয়ারম্যান হাজি নুরুল সাহেবকে অনুরোধ করছি, দলের ক্ষতি করবেন না। আমাকে যদি কাজ করতে না দেওয়া হয় আমাকে টাউন প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরিয়ে যে কাজ করতে পারবে, যাঁর সঙ্গে কারও কোনও প্রবলেম হবে না, তাঁকে দায়িত্ব দিয়ে, দয়া করে দলকে বাঁচান। দলের ক্ষতি করতে হবে না। আমার পদের দরকার নেই।' 


যখন তিনি এই কথা বলছেন, তখন বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান মঞ্চে বসে রয়েছেন তৃণমূলের বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জেলা চেয়ারম্যান কাজী নুরুল ইসলাম। তাঁদের সামনে এভাবেই ক্ষোভ উগরে দিলেন বসিরহাটের টাউন তৃণমূল সভাপতি। 


ফের প্রকাশ্যে মতবিরোধ:
এই ঘটনার পরই বসিরহাটে ফের প্রকাশ্যে চলে এল শাসকদলের মতবিরোধ। এদিন অভিজিৎ ঘোষ আরও বলেন, 'কিছু অশুভ তৃণমূল বসিরহাট টাউন তৃণমূল কংগ্রেসকে ক্ষতি করছেন। পুরসভা ভোটের সময় তাঁরা একাধিকভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করেছেন। এখনও ক্ষতি করছে, তাঁকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না।


কোন্দল নেই, দাবি জেলা সভাপতির:
এই ঘটনাকে গোষ্ঠী কোন্দল বলতে মানতে রাজি নন দলের জেলা সভাপতি সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, যা সমস্যা রয়েছে তা দ্রুত মিটে যাবে। তিনি বলেন, 'সাংগঠনিক জেলাটাউন সভাপতি যে কথা বলেছে দল ও প্রশাসনের মধ্যে একটু পার্থক্য থাকে সেই কারণে কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে। এক জায়গায় বসে বিষয়টি মিটিয়ে নিলে ঠিক হয়ে যাবে।' 


মঞ্চের উপর জেলাস্তরের নেতাদের সামনে দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছেন তৃণমূল নেতা। তারপরেই বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ ছুড়েছে বিজেপি। বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, 'তৃণমূল কংগ্রেসের যে দুর্নীতি সারা রাজ্যবাসী দেখছে। যাঁরা ভাল ভাবে কাজ করবেন তাঁরা দলে স্থান পাবেন না সম্মান পাবেন না। তাই টাউন সভাপতি যে কথা বলেছেন তাতে স্পষ্ট হয়ে ওঠে বসিরহাট টাউনে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে।'


সব ঠিক থাকলে আগামী বছরেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে ঘর গোছানো শুরু করেছে সব দল। জনসংযোগে জোর দিতে জেলায় জেলায় বিজয়া সম্মিলনী করছে তৃণমূল। কিন্তু সেই মঞ্চেই দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন তৃণমূলের একাধিক নেতা। যা নিয়ে ঘাসফুল শিবিরে অস্বস্তি বাড়ছে, এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের।
  
আরও পড়ুন: সিত্রাং-এর অর্থ কী? কেন এমন নাম ঘূর্ণিঝড়ের? কীভাবে ঠিক হয় ঘূর্ণিঝড়ের নাম?