পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: ব্যাঙ্ক এবং ডাকঘরের অ্যাকাউন্টে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা জমা। গত কয়েক বছরে খরচ প্রায় পৌনে এক কোটি টাকা। হিসেব বহির্ভূত সম্পত্তি ও দুর্নীতির (Disproportionate Assets) এই অভিযোগে বনগাঁর (Bangaon News) দমকলের (Fire Brigade Officer) এক স্টেশন অফিসারকে গ্রেফতার করল রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা। ধৃতের ৪ মে পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।


দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার দমকলের স্টেশন অফিসার।  ব্যাঙ্কে হিসেব বহির্ভূত ৫০ লক্ষ টাকা জমা। কয়েক বছরে খরচ প্রায় ৭৩ লক্ষ টাকা। জিজ্ঞাসাবাদে টাকার হিসেব দিতে না পারায় গ্রেফতার বলে রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা সূত্রে দাবি।  


অভিযোগ  জমা পড়ে কয়েক বছর আগেই


কয়েক বছর আগেই ওই অফিসারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়ে। সেই অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা। পুলিশ সূত্রে দাবি, উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় দমকলের স্টেশন অফিসার দেবাশিস হালদার। 


২০১৬ থেকে ২০২১ এর মধ্যে তাঁর ৫টি ব্যাঙ্ক ও ডাকঘরের ২টি অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে ৫০ লক্ষ টাকা। ওই সময়ের মধ্যে তিনি মেয়ের পড়াশোনা, গয়না কেনা ও বিমার প্রিমিয়াম বাবদ বিভিন্ন খাতে খরচ করেন প্রায় ৭৩ লক্ষ টাকা।  অথচ ওই সময়ের মধ্যে তিনি বেতন বাবদ পেয়েছেন ২১ লক্ষ টাকা। 


আরও পড়ুন: Mamata attacks Centre : " ওদের মতো দায়িত্বজ্ঞানহীন হতে পারব না", ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ মমতার


রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা সূত্রে খবর, বেতনের বাইরে হিসেব বহির্ভূত এত টাকা কীভাবে অ্যাকাউন্টে জমা পড়ল, কীভাবেই বা তিনি প্রায় পৌনে এক কোটি টাকা খরচ করলেন, সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি অভিযুক্ত দমকল অফিসার।  


জেরায় বয়ানে অসঙ্গতি ধরা পড়ে


বুধবার জিজ্ঞাসাবাদে বক্তব্য অসঙ্গতি মেলায় গ্রেফতার করা হয় দমকলের এই অফিসারকে। বৃহস্পতিবার নগর দায়রা আদালতে পেশ করা হলে ধৃতের ৪ মে পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। মুখ্য সরকারি আইনজীবী দীপঙ্কর কুণ্ডুর বক্তব্য, "৪ মে তারিখ অবধি  হেফাজতে পেয়েছি। ওঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল।" যদিও অভিযুক্তের আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন , "পুলিশ মিথ্যে কেস সাজিয়েছে। উনি তো পালিয়ে যেতেন না।" 


রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা সূত্রে দাবি, এর আগেও একাধিকবার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অভিযুক্তর বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারে। বাড়িতেও তল্লাশি চালিয়ে কিছু নথি মেলে। সূত্রের খবর, অভিযুক্তর বেনামে কোনও অ্যাকাউন্ট আছে কি না, সে সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।