সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: পাখির চোখ যখন ভোটবাক্স, তখন সৌজন্যের বালাই থাকে না। বিগত কয়েক বছরে বাংলার রাজনীতিতে আক্রমণ পাল্টা আক্রমণের পালা যত বেড়েছে, ততই বিদায় নিয়েছে সৌজন্য বোধ। পৌরসভা নির্বাচনের (WB Municipal Polls) আগে সেই রীতি যখন তুঙ্গে, সেই সময় দুই রাজনীতিকের মধ্যে বিরল সৌজন্য বিনিময় দেখা গেল ব্যারাকপুরে। নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র জমা দিতে এসে পরস্পরকে অভিবাদন জানানোর পাশাপাশি, শুভেচ্ছা জানাতেও দেখা গেল দুই প্রতিদ্বন্দ্বী শিবিরের প্রার্থীকে।


বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুরের (Barrackpore News) প্রশাসনিক ভবনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। সেই মতো বেলার দিকে সেখানে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন বিজেপি-র প্রার্থীরা। আবার ওই সময়ই মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন ব্যারাকপুর পৌরসভার পৌর প্রশাসক উত্তম দাস। কিন্তু চোখ চাওয়াচাওয়ি হওয়া মাত্রা অন্য রাস্তা ধরেননি তিনি। বরং বিরোধী দলের প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। করমর্দন করেন একে একে প্রায় সকলের সঙ্গেই। এমনকি বিরোধী শিবিরের বয়সে ছোট প্রার্থীদের মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদও করেন।


আরও পড়ুন: UP election 2022: ‘ভুল করলে উত্তরপ্রদেশ হবে বাংলার মতো’,মন্তব্য যোগীর, ‘হার বুঝে হুমকি’,নিন্দায় তৃণমূল, বাম,কংগ্রেস


রাজ্য রাজনীতিতে তো বটেই, কেন্দ্রীয় রাজনীতিতেও তৃণমূল এবং বিজেপি-র মধ্যে একেবারে বনিবনা নেই। দুই শিবিরের নেতারা লাগাতার পরস্পরকে আক্রমণ করে চলেন। এমন পরিস্থিতিতে বিরোধী শিবিরের প্রার্থীদের সঙ্গে এমন সৌজন্য সম্পর্ক সম্ভব হল কী ভাবে জিজ্ঞাস করা হয় উত্তমকে। জবাবে তিনি বলেন, ‘‘ব্যারাকপুরে বিরোধীরা কখনও আক্রান্ত হননি। আর আগামী দিনেও কখনও তাঁদের আক্রান্ত হতে হবে না। তাই রাজনৈতিক সৌজন্যতা যেমন আগেও ছিল, এখনও রয়েছে এবং আগামী দিনেও থাকবে।’’


বর্তমানে বিরল হয়ে দাঁড়ালেও, এই সৌজন্যবোধ বাংলার রাজনীতির জন্য শুভ বলে মন বিজেপি-র প্রার্থী মিলনকৃষ্ণ আঁশ। তিনি বলেন, ‘‘এই রাজনৈতিক সৌজন্যতা বজায় থাকলে বাংলার রাজনীতির অনেক উন্নতি হবে।’’


আবার ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই রাজনৈতিক সৌজন্যতাকে সাধুবাদ জানাই। এই সৌজন্যতা নির্বাচনের সময়ও বজায় থাকলে ব্যারাকপুরে ভাল ফল করবে বিজেপি।’’