সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: শ্যামনগরের এক্সাইড কারখানাকে কেন্দ্র করে ফের প্রকাশ্যে ব্যারাকপুরের সাংসদ ও জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়কের দ্বন্দ্ব। নাম না করে দুর্নীতি ইস্যুতে দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যামকে নিশানা করেছেন অর্জুন সিংহ। প্রমাণ থাকলে দলকে জানান, পাল্টা চ্যালেঞ্জ করেছেন জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক।
শ্যামনগরের এক্সাইড কারখানায় চুরি, ফের একবার বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন ব্যারাকপুরের সাংসদ ও তৃণমূল নেতা অর্জুন সিংহ। কারখানার গেট মিটিংয়ে ম্যানেজমেন্টের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই তুললেন একের পর এক অভিযোগ। এমনকী নাম না করে নিশানা করলেন জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যামকে। শ্য়ামনগরে এক্সাইড কারখানায় ইউনিয়নের দখলদারি নিয়ে ফের একবার প্রকাশ্যে তৃণমূলের অন্তর্কলহ। ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ বলেন, 'এখানে যত দুর্নীতি হচ্ছে এই কারখানার মধ্যে, সব দুর্নীতির ছবি তুলে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করুন।' তিনি আরও বলেন, 'দুর্নীতি করতে দেওয়া হবে না, তাদের ঘাড়ধাক্কা দিয়ে দল থেকে বের করে দেওয়া হবে। যেখানে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে পার্টি চলছে। সেখানে কিছু অসাধু ম্যানেজমেন্ট আর কিছু অসাধু শক্তিকে নিয়ে তারা ভাবছে, এই এক্সাইড ব্যাটারিকে লুটেপুটে খাব, আমরা চোখ বন্ধ করে রাখব, এটা কিন্তু অসম্ভব ব্যাপার, এটা কিন্তু আমরা মানতে পারব না।'
এই ব্যাটারি কারখানায় দুটি ইউনিয়ন রয়েছে। একটি এক্সাইড পার্মানেন্ট মজদুর মোর্চা, যার নেতা সাংসদ অর্জুন সিংহের আত্মীয় সঞ্জয় সিংহ। অন্যটি, এক্সাইড শ্রমিক ইউনিয়ন, যার নেতা জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম।
অর্জুনের অভিযোগ, সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কারখানা থেকে দিনের পর দিন লেড চুরি হচ্ছে। এমনকী টাকার বিনিময়ে কারখানা অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ করা হচ্ছে।
অর্জুন সিংহের অভিযোগ, 'কিছু লোক কারখানা থেকে চুরি করছে। এক্সাইড কারখানা থেকে ট্রাকের পর ট্রাক লেড চুরি করে মার্কেটে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। লোকের কাছ থেকে চাকরির নাম করে টাকা তোলা হচ্ছে। কন্ট্রাকচুলায় লেবার ঢোকাচ্ছে, শ্রমিকের অধিকার খণ্ডন হচ্ছে। সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এখানে অসাধু চক্র চলছে। ইউনিয়নের নামে দলের চিহ্ন মুছে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।'
পাল্টা তোপ দেগেছেন জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়কও সোমনাথ শ্যাম। তাঁর দাবি, 'ব্যারাকপুরের সাংসদের কাছে যদি দুর্নীতির অভিযোগ থাকে তাহলে সেটা দলকে জানান। কোনও তথ্য থাকলে সোশাল মিডিয়ায় জানানোর দরকার নেই। দলকে জানালে পদক্ষেপ করা হবে। কেউ বললে তো হল না চুরি হচ্ছে, প্রমাণ করতে হবে। চাকরির পিছনে কোনও দুর্নীতি আছে কি না সেটা প্রমাণ করতে হবে।'
অর্জুন-সোমনাথ দ্বন্দ্বকে ঘিরে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিরোধীরা। বিজেপির ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'সার্বিকভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত একটা দলের সাংসদ-বিধায়কের লড়াই, কার কাছে তোলাবাজির টাকা পৌঁছবে সেটা নিয়েই দ্বন্দ্ব।' সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য গার্গী চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'তৃণমূলের নিজেদের মধ্যে ভাগ বাঁটোয়ারার লড়াই। দখলদারির রাজনীতি।'
আরও পড়ুন: আতিক শ্যুটআউটে যোগীর পুলিশকে নিশানা! CBI তদন্ত দাবি বাবুল সুপ্রিয়