সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: বর্ষা বিদায় নিলেও ইছামতীর নদীর জল উপচে ভাসছে উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas Flood) গাইঘাটা, স্বরূপনগর, বাদুরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা। জলবন্দি সাধারণ মানুষ। জলের তলায় কেটেছে দুর্গাপুজো। কালীপুজোও জলবন্দি অবস্থায় কাটবে বলেই আশঙ্কা করছেন সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতিতেই ইছামতী নদীর ড্রেজিং নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।


জলবন্দি অবস্থা: ভাসছে ঘর-বাড়ি। জলবন্দি সাধারণ মানুষ। জলের তলায় রাস্তা। হাঁটুর উপর জল ঠেলে চলছে যাতায়াত। রাস্তা না পুকুর, দেখে বোঝার উপায় নেই। জলমগ্ন রাস্তা পেরনোর একমাত্র উপায় নৌকা। বর্ষা বিদায় নিলেও এই ছবি উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা, স্বরূপনগর, বাদুরিয়ার। ইছামতী নদীর জল উপচে ভাসছে বিস্তীর্ণ এলাকা। এক মাস ধরে জলবন্দি এলাকাবাসী। গাইঘাটার বাসিন্দা লীলাবতি বিশ্বাস বলছেন, "এখন এক মাসের বেশি হয়ে গেছে এরকম। ঘরে পোকা মাকড়। ছেলে মেয়েরা সকুলে যেতে পারছে না। জলে ডুবে থাকলে যা পরিস্থিতি। রান্না ঘরে জল। যে যেভাবে পারছে বেঁচে আছে।''


গাইঘাটা ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায়। যার মধ্যে রয়েছে বলদেঘাট এলাকাও। যে জমিতে ধান চাষ করা হয়েছিল সেই জমিও এখনও জলের তলায়। জল নামছে না প্রায় বেশ কয়েক সপ্তাহ হয়ে গেছে। ক্ষতির আশঙ্কা করছেন এখানকার কৃষকরা। ওই এলাকার বাসিন্দা বলেন, "কোথায় একটা টিপির বাঁধ আছে শুনেছি। ওটা কেটে দিলে এই জলগুলো শুকিয়ে যেত। কাটে না তাই শুকোয় না। সমস্ত কিছুতে বাধা আসছে। চাষহাস তো সব জমি ডুবে গেছে। কাঁচা ধান, পাকা ধান সব জলে ডুবে আছে।''


দুর্গাপুজো কেটেছে জলবন্দি হয়ে। কালীপুজোও জলের তলায় কাটবে, আশঙ্কা করছেন এবাকাবাসী। দীর্ঘদিন ধরে ইছামতী নদীতে ড্রেজিং না হওয়ার কারণেই প্রত্য়েক বছর এই পরিস্থিতি তৈরি হয় বলে অভিযোগ। এনিয়ে কেন্দ্রের দিকে আঙুল তুলেছে তৃণমূল। পাল্টা জবাব দিয়েছে বিজেপিও। অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী বলেন, "জলমগ্ন হয়ে আছে এটা ঠিকই। ইছামতী নদী সংকস্কারের প্রয়োজন আছে। খাল-বিল-ড্রেন রাজ্য় সরকার করে। নদীগুলো কেন্দ্রীয় সরকারের এক্তিয়ারের মধ্য়ে পড়ে। কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকার বিগত ১০ বছর ধরে ইছামতী নদী সংস্কারে উদাসীন। বনগাঁর সাংসদ বারবার নদীর ধারে গিয়ে ফিতে কাটছেন, বলছেন সংস্কার হবে। আজ পর্যন্ত এক কোদাল মাটি তুলতে দেখিনি।''  বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, "উনি জানেনই না। উনি জানেন না। ওঁর জেনে বলা উচিত। শান্তনু ঠাকুর তেঁতুলদিয়া থেকে কালাঞ্চি পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার যেমন পানা পরিষ্কার করেছেন, তেমন ড্রেজিং করেছেন। আরও এ পাশে যে ইছামতী নদী বনগাঁর দিকে যে আসছে ইন্দো-বাংলার সাথে প্রোটোকলে বেধে আছে। আপনি আগে জেনে নিন শান্তনু ঠাকুর কতটা কাজ করেছেন। আপনারা করতে দিচ্ছেন না। রাজ্য় সরকার করতে দিচ্ছে না। তার জন্য় কাজটা আটকে আছে।''


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে। 


আরও পড়ুন: Kunal-Narayan Meet: কুণালের সঙ্গে নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক, কড়া প্রতিক্রিয়া একাধিক চিকিৎসক সংগঠনের