রঞ্জিত সাউ, জয়ন্ত পাল, নাগেরবাজার: বিয়ে না হলেও, একছাদের নিচে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁরা। আইনি সিলমোহরের অপেক্ষা না করে, পরস্পরের ভাল-মন্দের শরিক হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন ভয়াবহ রূপ নিল। নাগেরবাজারে একছাদের নিচে বসবাসকারী প্রেমিকার বিরুদ্ধে প্রেমিককে খুন করার অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়ে গেল। (Nagerbazar Murder Case)


নাগেরবাজার থানা এলাকায় থেকে এই ঘটনা সামনে এসেছে। পূর্ব সিঁথি মধুগড় এলাকার একটি আবাসনে ওই যুগল লিভ-ইন করতেন বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি অচেনা নম্বর থেকে হঠাৎ ফোন আসে থানায়। জানানো হয়, মধুগড় এলাকার একটি বহুতল আবাসনের সিঁড়িতে এক যুবকের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। (Kolkata News)


খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ওই আবাসনে পৌঁছয় নাগেরবাজার থানার পুলিশ। আবাসনের সিঁড়িতে যুবকের রক্তাক্ত শরীরটি পড়েছিল। সংজ্ঞাহীন এবং রক্তাক্ত অবস্থায় ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসকরা ওই যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এর পর ওই যুবতের নাম-পরিচয় জানতে উদ্যোগী হয় পুলিশ। ওই নিহত যুবককে ৩০ বছর বয়সি সার্থক দাস বলে শনাক্ত করা গিয়েছে। 


আরও পড়ুন: Sandeshkhali Incident: মাঠ দখল করে দোকান! সন্দেশখালিতে নিশানায় আরও ১ শাসক-নেতা


ওই আবাসনে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। যোগাযোগ করা হয় যুবকের পরিচিতদের সঙ্গে, তাতেই প্রেমিকা সংহতি পালের নাম উঠে আসে। ৩২ বছর বয়সি সংহতি এবং সার্থক ওই আবাসনে একছাদের নিচে থাকতেন। একসঙ্গে সেখানে সংসার পেতেছিলেন তাঁরা। এর পর সংহতির কাছে পৌঁছয় পুলিশ। গোড়ার দিকে সংহতি তদন্তে সহযোগিতা করছিলেন না বলে জানা যায় পুলিশ সূত্রে। 


তবে পুলিশ চেপে ধরলে সংহতি প্রেমিককে খুনের কথা স্বীকার করে নেন বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে এদিক ওদিক কথা ঘোরানোর চেষ্টা করেন সংহতি। কিন্তু ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ চললে, ভেঙে পড়েন তিনি। ধারাল অস্ত্র দিয়ে সার্থককে আঘাত করার কথা স্বীকার করে নেন। পারস্পরিক ঝামেলার জেরেই তিনি সার্থককে আঘাত করেন বলে জানিয়েছেন সংহতি। 


সংহতিকে আটক করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, আগেও বিয়ে হয়েছিল সংহতির। প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় দু'বছর আগে। এর পর, গত এক বছর ধরে সার্থকের সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন তিনি। কিন্তু কী এমন ঘটল, যাতে এমন পদক্ষেপ করতে হল তাঁকে, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।। নাগেরবাজার থানার পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।