সমীরণ পাল, বাগদা: সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন (Pancjayat Elections 2023)। তার আগে, নিজের সংসদীয় এলাকায় গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়লেন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur )। রাস্তা সংস্কারের দাবিতে তাঁর গাড়ি ঘিরে ক্ষোভ জানালেন স্থানীয়রা।  পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, গাড়ি থেকে নেমে আসতে হয় শান্তনুকে। সংসদের তহবিলে বরাদ্দ টাকা থেকে রাস্তা সংস্কারে একটি পয়সাও খরচ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন সকলে। এমনকি শান্তনুর সামনে ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারিও দেন স্থানীয়রা (Bagda News)।


রাস্তা সংস্কারের দাবিতে শান্তনুর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ স্থানীয়দের


রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার হাউলডাঙায় দলীয় সভায় যোগ দিতে যাচ্ছিলেন বিজেপি (BJP) সাংসদ শান্তনু। সেই সময়  রাস্তায় তাঁর গাড়ি আটকান স্থানীয়রা। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই আবার গ্রামের মহিলা ছিলেন। শান্তনুর গাড়ি ঘিরে ক্ষোভ জানান তাঁরা। অভিযোগ করেন যে, এই পঞ্চায়েত এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার অবস্থা বেহাল। বার বার পঞ্চায়েত জানালেও সুরাহা হয় না। ২০১৮ সালে বিজেপি প্রার্থীকে ভোট দিয়েই পঞ্চায়েতে জিতিয়েছিলেন স্থানীয়রা। পরবর্তী কালে তিনি তৃণমূলে যোগ দিলেও, বিজেপি-কে ভোট দিয়েও কেন রাস্তা হল না, প্রশ্ন তোলেন স্থানীয়রা।


পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, ক্ষোভের জেরে একচুলও নড়তে পারেনি শান্তনুর গাড়ি। ফলে গাড়ি থেকে নেমে আসেন তিনি। তাতে কার্যত তাঁকে ঘিরে ধরেন স্থানীয়রা। বিক্ষোভে শামিল এক মহিলা বলে ওঠেন, "ভোটের আগে রাস্তা চাই। নইলে আমরা গ্রামবাসীরা ভোট বয়কট করব। কেউ ভোট দেব না। ক্ষমা করবেন স্যর, কিন্তু ভোট চলে গেলে কোনও নেতাকে পাই না আমরা। ভোটের আগে সকলে আসেন, এই দেবেন, সেই দেবেন বলে চলে যান। তার পর পাঁচ বছর আর দেখা মেলে না।"


আরও পড়ুন: Asansol: ভুল চিকিৎসায় ছাত্রী মৃত্যুর অভিযোগে তুলকালাম আসানসোলের লালগঞ্জ


শুধু তাই নয় শান্তনু এবং সংবাদমাধ্যমের সামনে রাস্তার বেহাল অবস্থা তুলে ধরেন স্থানীয়রা। তাতে দেখা যায়, হাত ছোঁয়ালেই রাস্তার উপরকার কালো পিচের পরত উঠে আসছে। এমনকি চাপ দিলে ঘাসের গালিচার মতে গুটিয়ে উঠে আসছে রাস্তার উপর ঢেলে দেওয়া সেই পিচের আস্তরণ। তাতে কার্যতই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা।  


রোষের মুখে পড়ে স্থানীয়দের আশ্বাস্ত করেন শান্তনু। বলেন, "আমি করে দেব। চিন্তা নেই।" কিন্তু তাতেও ক্ষোভ মেটেনি। সাংসদ তহবিলে টাকা থেকে রাস্তা সারাইয়ে এক পয়সাও খরচ হয়নি বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। তবে শান্তনু জানান, গত দু'বছর কিছু কারণের জন্য সাংসদ তহবিলের টাকায় হাত পড়েনি। তিনি গ্রাম পঞ্চায়েতকে ওই টাকা দেবেন, যাতে রাস্তা ঠিক হয়। পঞ্চায়েতের তরফে বলা হয়, কোনও আর্থিক তহবিল না থাকাতেই রাস্তা সংস্কার হয়নি। 


রোষের মুখে পড়ে স্থানীয়দের আশ্বাস্ত করেন শান্তনু


শান্তনু জানিয়েছেন, সরাসরি কোনও ভাবে পঞ্চায়েতকে টাকা দিতে পারেন না তিনি। জেলাশাসকের মাধ্যমে টাকা দিতে হবে। জেলাশাসকের মাধ্যমে যাতে পঞ্চায়েতের হাতে টাকা পৌঁছয়, রাস্তা সংস্কার হয়, তা দেখবেন বলে জানান শান্তনু। এর পরই এলাকা থেকে বিক্ষোভ ওঠে।