শুভেন্দু ভট্টাচার্য, রাজা চট্টোপাধ্যায়, অরিন্দম সেন, কোচবিহার ও শিলিগুড়ি : বাস ভাঙচুর। দোকানপাট বন্ধ করতে দাদাগিরি। তৃণমূল (TMC)-বিজেপির সংঘর্ষ। বিজেপির (BJP) ডাকা উত্তরবঙ্গ বন‍্ধে (North Bengal Strike) সেই চেনা ছবিগুলিই ফিরে এল শুক্রবার। 


উত্তর দিনাজপুরের (North Dinajpur) কালিয়াগঞ্জে নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ। পুলিশের গুলিতে যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ। তোলপাড় পড়ে গেছে রাজ্য জুড়ে। এই প্রেক্ষাপটেই, শুক্রবার ১২ ঘণ্টার উত্তরবঙ্গ বন‍্ধের ডাক দেয় বিজেপি। 


সেই বন্‍ধকে ঘিরে এদিন সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা ছড়ায় কোচবিহারে। দক্ষিণ খাগড়াবাড়িতে অশান্তির আশঙ্কায় হেলমেট পরেই সরকারি বাস নিয়ে রাস্তায় নামেন চালক। সেই বাসেই ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠল বনধ সমর্থকদের বিরুদ্ধে। চাকির মোড়ে আর একটি সরকারি বাস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলেছে গেরুয়া শিবির। দুপুরেও মাথাভাঙায় একটি সরকারি বাসে ভাঙচুর করা হয়। কোচবিহারে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাসে বিজেপির বিক্ষোভ ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। বিজেপি বিধায়ক মালতীরাভা রায়ের নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখায় জেলা নেতৃত্ব। পুলিশ কার্যত তাঁদের টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্য়ানে তোলে।


বনধের সমর্থনে আলিপুরদুয়ারে, সরকারি বাস ডিপো বন্ধ করে দেয় বিজেপি। সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে ডিপো। কুমারগ্রামের বিজেপি বিধায়ক মনোজ ওঁরাও সহ প্রায় ১৬ জন বিজেপি নেতা-কর্মীকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ধুন্ধুমার বাধে শিলিগুড়িতে।পুলিশের ব্যারিকেড ফেলে বন্‍ধ সমর্থনে মিছিল এগিয়ে নিয়ে যায় বিজেপি। পুলিশ বাধা দিতে গেলে, কার্যত ধস্তাধস্তি বেধে যায় দু-পক্ষের মধ্যে। জোর করতে বাস আটকাতে গেলেও, বাধা দেয় পুলিশ। বাসের মধ্যে উঠে চালককে শাসাতে দেখা যায় বনধ সমর্থনকারীদের। আসন থেকে জোর করে তুলে দেওয়া হয় চালককে।


আরও পড়ুন- ‘সত্যি সত্যিই ঢাকি সমেত বিসর্জন হয়ে গেল!’ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এজলাস বদলে খোঁচা দেবাংশুর


জলপাইগুড়ি শহরের কদমতলায় বিজেপি পার্টি অফিসের সামনে রাস্তায় নেমে সরকারি বাস বন্ধ করে দেন বিজেপি কর্মীরা। এমনকী ওই এলাকাতেই জোর করে স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগও উঠেছে। জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ অফিস বন্ধ করতে গেলে, পুলিশের সাথে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বন্‍ধ সমর্থকরা। ঠিক একই ভাবে জেলার হেড পোস্ট অফিসেরও শাটার নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বন্‍ধ সমর্থকদের বিরুদ্ধে। রাস্তা থেকে বনধের আঁচ গিয়ে পড়ে রেললাইনেও। আটকে দেওয়া হয় হলদিবাড়ি-নিউ জলপাইগুড়ি প্যাসেঞ্জার ট্রেন।


মালদায় জোর করে নামিয়ে দেওয়া হয় ব্যাঙ্কের শাটার। পোস্ট অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে ডিপো থেকে বেরোনোর পরই, বিজেপি কর্মীরা বাইকে চেপে ধাওয়া করে সরকারি বাসের সামনে বসে পড়েন। এরপরই পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বেধে যায় তাঁদের। বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। তবে উল্টো ছবি ধরা পড়েছে পাহাড়ে। ২০০৯ থেকে দার্জিলিঙের লোকসভা কেন্দ্র বিজেপির দখলে আছে। তারপরও এদিন পাহাড়ে সেভাবে বন‍্ধের প্রভাব পড়েনি।


আরও পড়ুন: Aloe Vera: গরমের মরসুমে ত্বকের কী কী সমস্যা দূর করে অ্যালোভেরা? কীভাবে কাজে লাগাবেন?