সনৎ ঝা, উত্তর দিনাজপুর: দুই তৃণমূল কর্মীকে গুলি করে খুনের পর থমথমে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার দিঘাপানা গ্রাম। ক্ষোভে ফুঁসছেন গ্রামবাসীরা। দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে সকাল থেকে রাস্তা অবরোধ করেন তৃণমূল কর্মীরা। গতকাল পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী বাছাই ঘিরে তৃণমূলের বুথ কমিটির সভায় খুনোখুনির ঘটনা ঘটে। তৃণমূলই তৃণমূলকে মেরেছে বলে অভিযোগ করেন মৃতের পরিবারের লোকজন।
সকাল থেকে বেশ কিছুক্ষণ অবরোধ চলার পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে আপাতত অবরোধ উঠে যায়।
কী ঘটেছিল:
পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার আগেই, প্রার্থীপদ নিয়ে খুনোখুনি। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় তৃণমূলের গুলিতেই খুন হলেন ২ তৃণমূল কর্মী। প্রার্থী নিয়ে বুথ কমিটির বৈঠক শেষ হতেই ঘটে গেল শ্যুটআউট। নিহত তৃণমূল কর্মীর ছেলে মহসীন ইসলাম বলেন, 'বুথ মিটিং ছিল। আসার সময় কিছু দুষ্কৃতী আমার বাবার ওপর হামলা করে গুলি মেরে দিয়েছে।' পঞ্চায়েত ভোটে কে প্রার্থী হবেন, তা নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে বৈঠক ডেকেছিল তৃণমূলের বুথ কমিটি। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রার্থী ঠিক করা নিয়ে তৃণমূলের বৈঠকে বচসাও হয়। বৈঠক শেষে সেই অশান্তি গড়ায় রাস্তাতেও। দুপুর ৩টে নাগাদ বৈঠক শেষে বেরিয়ে আসছিলেন সত্তর বছরের তৃণমূল কর্মী ফয়জুল রহমান। তাঁর ছেলের অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত জনাকয়েক দুষ্কৃতী। তাঁর বাবাকে টার্গেট করে গুলি চালায়। ফয়জুল রহমানকে দলুয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর তৃণমূলকর্মী হিসেবে পরিচিত হাঁসু মহম্মদও গুলিবিদ্ধ হন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্য়ালে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত ফয়জুলের পরিবারের লোকজন দিঘাপানা গ্রামের রাস্তায় আগুন জ্বেলে বিক্ষোভ দেখান।
চলতি মাসেই ইসলামপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে মৃত্যু হয় এক তৃণমূল নেতার ভাইয়ের। হামলার ঘটনায় দলের জেলা সভাপতি ও ব্লক সভাপতির দিকে আঙুল তোলেন তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী। সেই বিতর্কের মধ্যেই পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে তৃণমূলকর্মী খুন হলেন উত্তর দিনাজপুরে।
কখনও অস্ত্র উদ্ধার, কখনও বোমা বিস্ফোরণ। বারবার নানা কারণে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া। এই বছরেই বেশ কয়েকবার উত্তর দিনাজপুরের নানা জায়গায় বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এবার চোপড়াতে গুলিকাণ্ডে প্রাণ গেল দুই জনের।
আরও পড়ুন: রামনবমীতে শিবপুর হিংসাকাণ্ডের পর আজ পরিস্থিতি কেমন?