সুদীপ চক্রবর্তী, ডালখোলা (উত্তর দিনাজপুর) : যত কাণ্ড যেন ব্যালট ঘিরে ! পঞ্চায়েত ভোটপর্বে এর আগে পেটে, মাঠে, ড্রেনে ব্যালট-কাণ্ড দেখা গেছে। আর এবার মাছের জালেও ব্যালট বাক্স ! ভোটের আড়াই সপ্তাহ পর ডালখোলায় মাছ ধরার জালে মিলল ব্যালট বাক্স। পুকুর থেকে মাছ ধরার জালে ব্যালট বাক্স উদ্ধারের ঘটনায় ডালখোলায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ব্যালট বাক্স উদ্ধার করেছে পুলিশ।
করণদিঘি ব্লকের বেলুয়া গ্রামের ২৫ নম্বর বুথের ঘটনা। ভোটের দিন সেখানের গণ্ডগোল হয়েছিল। ওই দিন সেখানে ব্যালট বাক্স ছিনতাই হয়। এমনটাই জানিয়েছেন করণদিঘির বিডিও। তিনি জানান, ভোটের দিন ব্যালট বক্স ছিনতাইয়ের একটা ঘটনা তিনি প্রিজাইডিং অফিসারের মাধ্যমে জানতে পেরেছিলেন। সেই ব্যালট বাক্স কিন্তু খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরের দিন সেখানে পুনরায় ভোট হয়। তার পরেই বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়। এরপর গতকাল মাছ ধরার জালে ওই ব্যালট বাক্স উদ্ধারের পর সোশাল মিডিয়ায় বিষয়টি ভাইরাল হয়। তাতে নড়েচড়ে বসে পুলিশ। বিডিও-র নির্দেশে ডালখোলা থানার পুলিশ ব্যালট বাক্সটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গেছে। প্রসঙ্গত, এই ২৫ নম্বর বুথ-সহ গোটা করণদিঘি ব্লকের ৫ জায়গায় পুনরায় ভোট হয়েছিল।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে পুকুর থেকে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার ফেলে দেওয়া দু'টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছিল সিবিআই। আর ভোটের বাংলায় পুকুর থেকে উঠে আসে ব্যালট বাক্স!
গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রয়োগের হাতিয়ার ব্যালট। পঞ্চায়েত ভোটের দিন সেই ব্যালটই কোথাও মাটিতে গড়াগড়ি খেল.. কোথাও ব্যালট নিয়ে দৌড় দিল দুষ্কৃতী, আবার কোথাও পুকুর বা ভ্যাটে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয় ব্যালট বাক্স।
পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার পুরুষোত্তমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে দিনভর শান্তিপূর্ণভাবে ভোট চললেও গভীর রাতে ব্যালট বাক্স নিয়ে যাওয়ার সময় গন্ডগোল বাধে ! আইএসএফের অভিযোগ, ভোট কর্মী ও পুলিশ কর্মীদের মারধর করে ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। ধাওয়া করতেই বাক্স পুকুরে ফেলে চম্পট দেয় তারা। পরে পুকুর থেকে জলভর্তি ব্যালট বাক্স উদ্ধার করে পুলিশ।
অন্যদিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর জ্যোতিষপুর পঞ্চায়েতেও ব্যালট বাক্স লুঠের অভিযোগ ওঠে। সন্ধেয় তৃণমূল ও আরএসপির সংঘর্ষে তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। তৃণমূলের অভিযোগ, ব্যালট বাক্স সিল করতে বাধা দেয় আরএসপির কর্মী সমর্থকরা। আটকাতে গেলে তাদের বেধড়ক মারধর করা হয়। ভাঙচুর চালানো হয় গাড়িতে। পুকুরে ফেলে দেওয়া হয় ব্যালট বাক্স। পুকুরে নেমে দুটি ব্যালট বাক্স উদ্ধার করেন গ্রামবাসীই। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে আরএসপি।