সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগে ব্যাপক উত্তেজনা রায়গঞ্জ মেডিকেলে। মৃত যুবকের নাম রুবাই রজক। বয়স ২৩ বছর। বাড়ি রায়গঞ্জের উকিলপাড়া এলাকায়। দীর্ঘদিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। তবে শেষ অবধি হাসপাতালের অসহযোগিতার অভিযোগে রোগী মৃত্যুর উঠেছে। 


জানা গিয়েছে, শারীরিক সমস্যায় দেখা দিলে আজ ভোর ৪.৩০ টা নাগাদ নিজে বাইক চালিয়ে এসে ভর্তি হন রুবাই রজক নামে ওই যুবক। এরপর তাকে কোনও রকম চিকিৎসা পরিষেবা, এমনকি তাকে ধরে বেডে নিয়ে যেতে সাহায্য করেননি হাসপাতাল, বলে অভিযোগ।এখানেই শেষ নয়,  'তাকে অক্সিজেনটুকুও দেওয়া হয়নি', বলে অভিযোগ।  অন্য রোগীরা বেড থেকে এসে তাঁকে সহযোগিতা করলেও, শেষ রক্ষা হয়নি বলেই দাবি করা হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে দায়িত্বে থাকা সিস্টার ইনচার্য বা কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। এদিকে মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছেছে রায়গঞ্জ থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে।


গতবছর  সদ্যোজাতের (neonatal) মৃত্যুকে (death) কেন্দ্র করে আর জি কর (R G Kar) হাসপাতালে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। চিকিৎসায় গাফিলতি হয়েছে, অভিযোগ করেছিল সেবার মৃত সদ্যোজাতের পরিবারের। জন্মের মাত্র ৫ দিনের মাথায় মারা যায় নবজাতকটি। পরিবারের অভিযোগ, তার মাথায় (head) আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কী ভাবে লাগল আঘাত? যা নিয়ে তোলপাড় হয় আরজি কর-এ।  দে গঙ্গার একটি পরিবারে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে। গত বছর ২৮ অক্টোবর প্রসূতিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ৩১ অক্টোবর ভূমিষ্ঠ হয় শিশুটি। পরিবারের সদস্যরা চেয়েছিলেন, সিজারের মাধ্যমে জন্মদান প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হোক। কিন্তু নর্মাল ডেলিভারিই করা হয়।


অভিযোগ, তার পর গত রাতে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পারে পরিবার। পরিজনদের অভিযোগ, ডেলিভারির সময়ই টানাহ্যাঁচড়া করতে গিয়ে নবজাতকের মাথায় আঘাত লাগে। 'খুনেরও' অভিযোগ এনেছেন পরিজনদের অনেকে। সকলের দাবি একটাই, অভিযুক্ত চিকিৎসকদের শাস্তি হোক। এর মধ্যেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে মৃতের পরিবার। পাশাপাশি পরিস্থিতি সামলাতে হাসপাতালের গেটে পৌঁছে যান পুলিশকর্মীরাও। হাজির ছিলেন হাসপাতাল কর্মীরাও। ঘটনার পরেই সুপারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। 


আরও পড়ুন, লেটার প্যাডে চাঁদা নিতেই কাঠগড়ায় বিজেপি নেতা, শোকজ করে ৭ দিনের সময় দিল দল 


সদ্যোজাতের মৃত্যু ঘিরে আগেও বিতর্কে জড়িয়েছে আরজি কর। ২০২০ সালে জুনের একটি ঘটনায় হইচই পড়ে যায় গোটা শহরে। সে বার সদ্যোজাতের মৃত্যু ঘিরে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ এনেছিল পরিবার।  পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে তীব্র আক্রমণ শানায় বিজেপি মহিলা মোর্চা। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ করা হয়, ১০ দিন ধরে শিশুমৃত্যুর খবর জানানো হয়নি। ঘটনার সপ্তাহদুয়েক আগেই চন্দননগর হাসপাতাল থেকে সদ্যোজাতকে কলকাতায় রেফার করা হয়েছিল। তারপরই ওই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।