সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: লোডশেডিং (loadshedding) হলেই আঁধারে ডোবে রায়গঞ্জ (Raigunj) ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। আর রাতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট (Electricity Problem) হলে তো কথাই নেই। হাঁসফাঁস গরমে আলো, ফ্যান ছাড়াই থাকতে হয় রোগীদের। মোমবাতি জ্বেলে ডিউটি করেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। কিন্তু কবে চালু হবে জেনারেটর পরিষেবা? সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
লোডশেডিং হলেই অন্ধকারে ডোবে রায়গঞ্জ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র
রাতে লোডশেডিংয়ে অন্ধকার সরকারি হাসপাতাল। বিশাল ঘরের এক কোনে মোবাইলের আলো জ্বেলে বিছানায় বসে রোগী ও তাঁদের আত্মীয়রা। মোমবাতির আলোয় কাজ সারতে হচ্ছে কর্তব্যরত নার্সকে। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এটাই চেনা ছবি। কারণ, লোডশেডিং হলে এখানে বিদ্যুতের কোনও বিকল্প ব্যবস্থা নেই।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, একটি ইনভার্টার থাকলেও, তা শুধুমাত্র লেবার রুমে ব্যবহৃত হয়। পুরো প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য ওই ইনভার্টার যথেষ্ট নয়। রাতে লোডশেডিং হলে অন্ধকারে হাঁসফাঁস গরমের মধ্যেই থাকতে হয় রোগীদের।
কী বলছেন ভুক্তভুগীরা?
রায়গঞ্জ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসাধীন রোগী রাজকুমার সরকারের কথায়, 'সারা রাত কারেন্ট ছিল না। মশার উপদ্রব তো আছেই, সঙ্গে গরম। প্রায় রোজই ২ থেকে ৩ ঘণ্টা করে লোডশেডিং হয়। হাসপাতালে কারেন্ট থাকে না। জেনারেটর হলে ভাল।'
এক রোগীর আত্মীয় আজাদ আলি বলছেন, 'লোডশেডিং হলে রোগীদের খুব সমস্যা। মশার উপদ্রব আছে। আমরা চাই এখানে জেনারেটর হোক।'
রায়গঞ্জ ব্লকের মহারাজাহাট এলাকায় অবস্থিত এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জেনারেটর রুম থাকলেও, কোনওদিনই জেনারেটর নেই। অথচ শীতগ্রাম, রামপুর, মহারাজা সহ প্রায় ১০-১২ টি গ্রামের বাসিন্দারা স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য এই সরকারি হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল।
রায়গঞ্জ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নার্স শ্রীদেবী বর্মন বলছেন, 'দিনের বেলা যেমন তেমন করে চললেও রাতে সমস্যা তীব্র হয়। গরমের পাশাপাশি মোমবাতি জ্বালিয়ে পরিষেবা দিতে হয়। সেক্ষেত্রে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়। বারবার কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হলেও সমস্যার সুরাহা হয়নি।'
আরও পড়ুন: Purba Bardhaman: ওভারলোডেড বালি বোঝাই গাড়ি ধরতে গিয়ে আক্রান্ত পরিবহণ দফতরের কর্মীরা
১০০ বেডের রায়গঞ্জ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সেখানে কবে চালু হবে জেনারেটর পরিষেবা?
রায়গঞ্জের ব্লক মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক আলতামাজ আলি বলছেন, 'জেনারেটরের জন্য বেশ কয়েকবার ওপরমহলে জানিয়েছি। রিমাইন্ডারও দিয়েছি। শুধু জেনারেটর দিলে তো হবে না। অপারেটরও দিতে হবে। একটা ইনভার্টার আছে। তা যথেষ্ট নয়।'
ব্লক প্রশাসনের আর্জিতে সাড়া দিয়ে জেলা প্রশাসন জেনারেটরের ব্যবস্থা করে কি না, সেদিকে তাকিয়ে সবাই।