সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর:  ৪ বছরেই ভিনরাজ্যের শ্রমিক থেকে কোটিপতি! স্কলারশিপের (Scholarship) কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করেছিলেন জালিয়াতি চক্রের মূল চক্রী। উত্তর দিনাজপুরে স্কলারশিপ দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড, মাহাতাবউদ্দিন সম্পর্কে উঠে এসেছে এমনই তথ্য। ধৃতের আরও ২ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। 


চার বছরে কোটিপতি: 
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, আগে মাহাতাবউদ্দিন ছিলেন ভিনরাজ্যের শ্রমিক। তখন তাঁর আর্থিক অবস্থা তেমন একটা ভাল ছিল না। ঋণ শোধ করতে পারবেন না, এই আশঙ্কায় ধার পর্যন্ত দিতেন না দোকানদাররা, দাবি পড়শিদের। তিনিই জাতিগত শংসাপত্রের তথ্য হাতিয়ে, অনগ্রসর সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের জন্য বরাদ্দ স্কলারশিপের বিপুল টাকা আত্মসাৎ করেছেন। উঠেছে এমনই অভিযোগ। আগে ছিল মাটির বাড়ি। চার বছর পর তার জায়গায় তৈরি হয়েছে দালান। এটি যার বাড়ি তিনিই উত্তর দিনাজপুরের অনগ্রসর স্কলারশিপ দুর্নীতির মূল মাথা মাহাতাবউদ্দিন। স্থানীয়দের দাবি, ৪ বছর ধরে চলা দুর্নীতির (Scam) টাকাতেই গড়ে উঠেছে এই বাড়ি।  


সম্পত্তির হদিশ:
একটি নয়, ওই এলাকায় মাহাতাবউদ্দিনের একাধিক বাড়ি রয়েছে। তাঁর নামে বেশ কিছু দোকানও রয়েছে। এছাড়াও সম্পত্তির তালিকায় রয়েছে প্রচুর জমি-জমা, পুকুর। পুলিশ সূত্রে খবর, মাহাতাবউদ্দিনের ৪টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে। পুলিশের সন্দেহ, তিনি একা নয়, স্কলারশিপ দুর্নীতিতে জড়িত তাঁর বাড়ির সদস্য সহ আরও অনেকে। মূল অভিযুক্তের ৩ ভাইয়ের বিরুদ্ধেও করণদিঘি থানা ও স্থানীয় বিডিওর কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। গত ২৪ এপ্রিল স্কলারশিপ দুর্নীতির মূল চক্রী মাহাতাবউদ্দিনকেগ্রেফতার করে পুলিশ। শনিবার, আরও ২ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে ইসলামপুর মহকুমা আদালত।


কী ঘটেছিল:
সম্প্রতি জাতি শংসাপত্রের তথ্য হাতিয়ে, অনগ্রসর সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের জন্য বরাদ্দ স্কলারশিপের বিপুল টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে করণদিঘিতে। রাজ্য সরকারের ওয়েসিস পোর্টাল ব্যবহার করে কীভাবে আবেদনকারীর নামে ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বানিয়ে টাকা তোলা হচ্ছে, সেই সংক্রান্ত নথিও প্রকাশ্যে এসেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, করণদিঘির বিডিও এবং আইসি-র কাছে তাঁরা অভিযোগ জানিয়েছিলেন। অভিযোগকারীদের একাংশের দাবি, স্কলারশিপ জালিয়াতির মূল চক্রী করণদিঘির সাবধান এলাকার বাসিন্দা মহতাবউদ্দিন। অভিযোগ, বিভিন্ন ব্যাঙ্কে নিজের একাধিক অ্যাকাউন্ট বানিয়ে অন্যদের জাতি শংসাপত্র ব্যবহার করে টাকা আত্মসাত্‍ করছেন তিনি। সেই কাজে মহতাবউদ্দিনকে সাহায্য করছে তার ৩ ভাই। তাদের নাম, হায়াত আলি, হুমায়ুন কবীর এবং সারজাহান আলি। দুটি বেসরকারি ও একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে মহতাবউদ্দিনের অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে। 


আরও পড়ুন:  আসছে ঘূর্ণিঝড় অশনি, বাংলায় অশনি-সঙ্কেত?