আবীর দত্ত, সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, পাতিপুকুর: বাড়ির ফ্রিজে খাবারের সঙ্গে মজুত সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কের (Blood Bank) পাউচ পাউচ রক্ত (Blood) আর প্লাজমা (Plasma)! মারাত্মক অভিযোগ পাতিপুকুরের (Patipukur) ভাড়াবাড়িতে। ভুয়ো নথি দেখিয়ে ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে প্লাজমা ও রক্ত নিয়ে, মোটা টাকায় বিক্রির অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল মানিকতলা থানার পুলিশ (Maniktala Police Station)।


বাড়ির ফ্রিজে খাবারের পাশে রাখা সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কের রক্তের পাউচ। রক্তের যে প্লাজমা মাইনাস ৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করে রাখার কথা, তা মজুত করে রাখা হয়েছে বাড়ির সাধারণ ফ্রিজে। চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উত্তর কলকাতার পাতিপুকুরে। অভিযান চালিয়ে বেআইনি রক্ত কারবারের পর্দা ফাঁস করল পুলিশ। 


এই ঘটনায় এলাকার একটি ভাড়া বাড়ি থেকে অনুপম ভট্টাচার্য নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের এক প্রতিবেশী জানাচ্ছেন, গতকাল পুলিশ এসেছিল। এই বাড়িতেই থাকেন অনুপম।


বাড়ির ফ্রিজে সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কের রক্ত আর প্লাজমা এল কীভাবে? পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত অনুপম ভট্টাচার্যের প্রতিবেশীরা জানতেন তিনি কোনও প্যাথলজিক্যাল ল্যাবে কাজ করেন। 


পুলিশ সূত্রে দাবি, বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের প্যাডে যেভাবে রোগীর জন্য রক্তের রিক্যুইজিশন দেওয়া হয়, সেই ভুয়ো রিক্যুইজিশন স্লিপ বানাতেন অনুপম। বিভিন্ন রক্তদান শিবির থেকে সংগ্রহ করতেন রক্তদাতাদের কার্ড। ভুয়ো রিক্যুইজিশন স্লিপ আর রক্তদাতাদের কার্ড বিভিন্ন সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কে দেখিয়ে  প্লাজমা আর রক্তের পাউচ সংগ্রহ করতেন তিনি। 


তারপর রোগীর পরিবারের কাছে তা বিক্রি করতেন মোটা টাকায়। বারাসাত, মধ্যমগ্রাম, কল্যাণীর মতো একাধিক জায়গায় ছোট ছোট নার্সিংহোমগুলির সঙ্গে ডিল হত অনুপমের। পুলিশ সূত্রে দাবি, ধৃতের বাড়ি থেকে জাল রাবার স্ট্যাম্প, ভুয়ো রিক্যুইজিশন স্লিপ সহ বিভিন্ন রক্তদান শিবিরের কার্ড উদ্ধার হয়েছে। 


১২ বছর ধরে রক্তের এই অবৈধ কারবার চালিয়ে যাচ্ছিলেন অনুপম। পুলিশ সূত্রে খবর, নিজের শ্যামবাজারের বাড়ি বিক্রি করে দিয়ে, গত দুবছর ধরে পাতিপুকুরের এই ভাড়াবাড়িতেই বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে থাকছিলেন অনুপম। 


আরও পড়ুন: CM Mamata Banerjee: রাজ্যে ৩০ হাজার চাকরি তৈরি: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়


স্থানীয় সূত্রে খবর, এই গাড়িতে করে নিয়ে আসা হত বিভিন্ন রকম রক্তের নমুনা। পুলিশের আশঙ্কা, বাড়ির ফ্রিজে রাখা খারাপ রক্তও রোগীর পরিবারকে বিক্রি করেছেন অনুপম। এর পিছনে কত বড় চক্র রয়েছে, তারই খোঁজে গোয়েন্দারা।