কলকাতা: ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকল দেশ। ১৯৯৯ সালে গাইসালের রেল দুর্ঘটনায় যত মানুষের মৃত্য়ু হয়েছিল, তাকে ছাপিয়ে গেল বালেশ্বরের দুর্ঘটনা। কিন্তু, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি তরতরিয়ে এগোনো সত্ত্বেও ট্রেনে যাত্রীসুরক্ষা এখনও সেই তিমিরে কেন? বালেশ্বরকাণ্ডে জোরাল হচ্ছে সেই প্রশ্ন।


১৯৯৯ সালের গাইসাল ট্রেন দুর্ঘটনা, ২০২৩-এর বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনা। পাশাপাশি রাখলে, হঠাৎ মনে হতে পারে, একই দুর্ঘটনার দুটো ছবি। কিন্তু, আসলে তা তো নয়ই, দুটো ছবির মাঝে সময়ের ব্য়বধানটাও নেহাত কম নয়। ২৪টা বছর। বালেশ্বর দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্য়া গাইসালকে টপকে গেছে। ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকে আরও মৃতদেহ উদ্ধার হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই।

কিন্তু, ২৪ বছর সময় তো নেহাত কম নয়। এর মধ্য়ে বিজ্ঞান কয়েকশো যোজন এগিয়েছে। আধুনিক থেকে আধুনিকতম প্রযুক্তি এসেছে। কিন্তু, বাস্তবে রেলের যাত্রীসুরক্ষার হাল ফিরল কোথায়? বিরোধীদের প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রী আত্মনির্ভর ভারতের কথা বলছেন, ভোকাল ফর লোকাল স্লোগান দিচ্ছেন, বিজেপি বলছে, মোদির আমলে ভারত বিশ্বগুরু হয়ে গেছে। তাহলে গাইসালকাণ্ডের ২৪ বছর পরও এত বড় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটল কী করে? গাইসালের আড়াই দশক পর, এক ট্রেন দুর্ঘটনায় তার থেকেও বেশি মৃত্যু হল কেন?তাহলে এতগুলো বছর কেটে গেলেও, আমরা কি সেই ২৪ বছর আগের জায়গাতেই দাঁড়িয়ে আছি? ঘটা করে নতুন প্রযুক্তি আনার কথা বলা হলেও, বাস্তবে যাত্রীসুরক্ষা কি সেই তিমিরেই?


গাইসালে অবধ অসম এক্সপ্রেস আর ব্রহ্মপুত্র মেলের সংঘর্ষে বীভৎসভাবে একটার ওপর উঠে গেছিল আরেকটা ট্রেন। শুক্রবার বালেশ্বরে দেখা গেল ঠিক সেরকমই ছবি।অথচ, দুটো ট্রেনের সংঘর্ষ যাতে এড়ানো যায়, সংঘর্ষ হলে ট্রেনের কামরা যাতে একটি আরেকটির মধ্য়ে ঢুকে না যায়, বা একটি আরেকটির ওপরে উঠে না যায়, ক্ষয়ক্ষতি যাতে কম হয়, সেজন্য় অ্য়ান্টি কলিশন ডিভাইস, রক্ষাকবচের মতো প্রযুক্তি এনেছে মোদি সরকার। ঘটা করে তার সূচনা হয়েছে।

কিন্তু, তা সত্ত্বেও সেই ১৯৯৯ সালের গাইসালের দুর্ঘটনায় যত মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন, ২৪ বছর পর বালেশ্বরের দুর্ঘটনায় প্রায় তার থেকেও বেশি মানুষের প্রাণ গেল কী করে? শনিবার প্রধানমন্ত্রী যখন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন, তখন এই প্রশ্ন তুলে মোদি সরকারকে বিঁধেছে বিরোধীরা। প্রাক্তন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী বলেন, “এক বছরে গোটা দুনিয়ায় যত লোক আছে তার চেয়ে বেশি লোক ভারতে রেলে সফর করে। সেখানে যদি ঠিক করে নজর না দেওয়া হয়, এটা সবচেয়ে বড় ভুল। আর সেটার ফল আমরা ভুগছি। ভুগছি কারণ রেলওয়ের তরফে যাত্রী সুরক্ষার দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে না। অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস, কবচ লাগালে নাকি অ্যক্সিডেন্ট হবে না? কবচ কোথায় ভাই?’’


আরও পড়ুন: Skin Care Tips: জিমে গিয়ে শরীরচর্চার পাশাপাশি খেয়াল রাখুন ত্বকেরও, কোন কোন বিষয় নজরে রাখবেন?