কলকাতা: রেলযাত্রা বিভীষিকা হয়ে উঠেছে। মত্যুপুরী থেকে কোনও রকমে ফিরেছেন। কিন্তু মনুষ্য শরীরের পোড়া গন্ধ, দুর্ঘটনার ভয়াবহতা কাটিয়ে উঠতে পারছেন না বাংলার বহু মানুষই। তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনায় যাঁরা আহত হননি, কিন্তু ট্রমায় রয়েছেন, মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন, তাঁদের আর্থিক সাহায্য় প্রদানের কথা জানালেন তিনি (Odisha Train Accident)। 


রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে এই ঘোষণা করেন মমতা। তিনি জানান, এমন বহু মানুষ রয়েছেন বাংলার, যাঁরা দুর্ঘটনায় আহত হননি। বাড়ি ফিরে এসেছেন। কিন্তু দুর্ঘটনায় ভয়াবহতা কাটিয়ে উঠতে পারেননি এখনও। ট্রমার মধ্যে রয়েছেন। সংখ্যাটা অন্তত দেড়-দু'হাজার হবেই। তাঁদের রাজ্য সরকার ১০ হাজার টাকা করে দেবে। আগামী তিন মাস তাঁদের পরিবারকে ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। চাল-ডাল জুগিয়ে সংসারেও সাহায্য করা হবে। 


দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনে বাংলা থেকে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মধ্যে অনেক পরিযায়ী শ্রমিকও ছিলেন বলে জানিয়েছেন মমতা। দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আপাতত রোজগারের রাস্তাও বন্ধ তাঁদের। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে তাঁরাও সাহায্য় পাবেন বলে জানিয়েছেন মমতা। এই বিপদের মুহূর্তে রাজ্য সরকার পাশে থাকবে বলে আশ্বাস জুগিয়েছেন। 


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: বাংলা থেকে ৬২ জনের মৃত্যুতে সিলমোহর, প্রায় ২০০ দেহ শনাক্ত হয়নি, জানালেন মমতা


এক সময়, দীর্ঘদিন রেলমন্ত্রকের দায়িত্ব সামলেছেন মমতা। বালেশ্বর দুর্ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন তিনি। দুর্ঘটনা প্রতিরোধী যন্ত্র 'কবচ' কেন বসানো ছিল না ট্রেনে, শনিবার রেলমন্ত্রীর সামনে দাঁড়িয়েই প্রশ্ন তোলেন। এ দিনও রেলের পরিকাঠামো নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলেন মমতা। 


তিনি যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন, দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে পরিবারের কাউকে চাকরি দিতে বলে জানান মমতা। বাংলা থেকে বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনায় যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারে ৫ লক্ষ টাকা করে দেবে বাংলার সরকার। গুরুতর আহতরা পাবেন ১ লক্ষ টাকা করে। অল্পবিস্তর চোট পেয়েছেন যাঁরা, তাঁদের ২৫ হাজার টাকা করে দেবে রাজ্য। এ ছাড়াও আহতদের চিকিৎসার খরচও রাজ্য সরকার দেবে বলে জানিয়েছেন মমতা।


এর আগে, শনিবার মৃতের সংখ্যা নিয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণোর সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দেয় মমতার। এ দিনও কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মমতা। যেখানে এখনও বহু দেহ শনাক্ত করা যায়নি, অনেকের খোঁজ পর্যন্ত মেলেনি এখনও, সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের তালিকায় হতাহত কী করে কমছে, প্রশ্ন তোলেন তিনি।