কলকাতা: করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায়  (Odisha Train Accident) বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল ভারতীয় রেলের আধুনিকীকরণের দাবি। দুর্ঘটনা এড়াতে ঘটা করে 'কবচ' প্রকল্প চালু করেছিল মোদি সরকার! দেখা যাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত গোটা দেশের মাত্র দু শতাংশ রেললাইন কবচের আওতায় এসেছে! কিন্তু কোথায় রেলের যাত্রী সুরক্ষা? কেন যাত্রীদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি? উঠছে সেই প্রশ্নগুলোও।


কোথায় যাত্রী সুরক্ষা? একটা দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে কারও রাতের ঘুম, কেউ চিরনিদ্রায়। এত মৃত্য়ু এড়াতেই তো ঘটা করে 'কবচ' প্রকল্প চালু করেছিল মোদি সরকার। সেই প্রকল্প ঘটা করে সামনে এনেছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। কিন্তু, কোথায় কী? রেল সূত্রে খবর, ভারতে প্রায় ৬৮ হাজার কিলোমিটার রেলপথের মধ্য়ে এখনও পর্যন্ত মাত্র ১ হাজার ৪৫০ কিলোমিটার ট্র্য়াক কবচের আওতায় এসেছে। মাত্র ৬৫টি ইঞ্জিনে বসানো হয়েছে, অ্য়ান্টি কলিশন ডিভাইস।


২০০১ সালে, মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এই কবচ প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিতি ঘটে। তখন শুধুমাত্র লোকোতেই অ্য়ান্টি কলিশন ডিভাইস বসানোর কথা বল হয়। পরবর্তীকালে ২০২০-র পর নতুন নামকরণ করা হয় - 'কবচ'।এমন এক প্রযুক্তি, যা দুটো ট্রেনের সংঘর্ষ আটকাতে সক্ষম। একই লাইনের ওপর দুটি ট্রেনের উপস্থিতি নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকেই বুঝতে পারে ‘কবচ’। সেই অনুযায়ী আগেভাগে ট্রেনের চালককে সতর্ক করে দেয় এই প্রযুক্তি। ইঞ্জিনে বসানো যন্ত্রের মাধ্যমে অনবরত সিগন্যাল দিতে থাকে ‘কবচ’।  যা চালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।  ‘কবচ’ শুধু সতর্কই করে না। এই প্রযুক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেনের গতিবেগও কমিয়ে দেয়।


এক্ষেত্রে বলা হয়, শুধু লোকোতে থাকলেই হবে না।  রেললাইনেও বসাতে হবে অ্য়ান্টি কলিশন ডিভাইস। ১ কিলোমিটার দূরত্বে বসাতে হবে কবচ। ফলে তৈরি হবে রেডিও ওয়েভ জোন। অ্য়ান্টি কলিশন ডিভাইস সিস্টেমটা তিনদিক থেকে নিয়ন্ত্রিত হবে। এক, ড্রাইভারের হাতে থাকবে তার কন্ট্রোল। দুই, যেখান থেকে গোটা সিস্টেম কন্ট্রোল হয়, সেখান থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। তিন, রেল ট্র্য়াক থেকেও কন্ট্রোল করা যাবে। চালক যদি রেড সিগন্য়াল কোনওভাবে এড়িয়ে য়ান, তাহলে অটোমেটিক্য়ালি ট্রেনটিকে দাঁড় করিয়ে দেবে কবচ।


কিন্তু, শুক্রবার বালেশ্বরে যে জায়গায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে,  সেখানে কবচ তো ছিলই না। সংঘর্ষের তীব্রতা এড়াতে, যে অ্য়ান্টি কলিশন ডিভাইস আনা হয়েছিল, তা-ও ছিল না করমণ্ডল এক্সপ্রেসে। রেল সূত্রে খবর, ১ কিলোমিটার ট্র্য়াকে কবচ বসানোর খরচ - ৫০ লক্ষ টাকা। গত বাজেটে রেলের বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ২ লক্ষ ৬০ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এর মধ্য়ে রেলেরই অন্য়ান্য় খাতে, যেমন সিগন্য়ালিং, লাইন, রেক এই পারপাসে দেখানো হয়, ২ লক্ষ ৪৫ হাজার ৩০০ কোটি।  কিন্তু বরাদ্দে অটোমেটিক সিস্টেমের ব্য়াপারে সেভাবে উল্লেখ নেই। গত কয়েক বছরে দাম বেড়েছে প্ল্য়াটফর্ম টিকিটের।তুলে দেওয়া হয়েছে সিনিয়র সিটিজেনদের ছাড়। কিন্তু তার পরিবর্তে যাত্রী সুরক্ষায় মন কোথায়? উঠছে এই প্রশ্নগুলো।


আরও পড়ুন: Sugarcane Juice Benefits: গরম পড়লেই ভরসা আখের রসে? কতটা কাজে লাগে? আদৌও উপকার রয়েছে?