সৌভিক মজুমদার, অনির্বাণ বিশ্বাস এবং পূর্ণেন্দু সিংহ, কলকাতা, বাঁকুড়া: স্ট্রংরুমের বাইরে ভোট (Election) দেওয়া ব্যালট পেপার (Ballot Paper) উদ্ধারের অভিযোগ। বাঁকুড়ার (Bankura) বড়জোড়ার BDO, SDO এবং একজন প্রিসাইডিং অফিসারকে (Presiding Officer) ৮ অগাস্ট তলব করলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা (Amrita Sinha)। কীভাবে স্ট্রংরুমের বাইরে ব্যালট পেপার? আদালতকে জানাতে হবে তিন প্রশাসনিক আধিকারিককে। 


হাইকোর্টে দাঁড়িয়ে গণনার সময় ব্যালট ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করেছিলেন হাওড়ার বালি-জগাছার বিডিও। সিপিএম প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বিকৃতির মামলায়, সিঙ্গল বেঞ্চের পর ডিভিশন বেঞ্চেও ধাক্কা খেয়েছেন উলুবেড়িয়ার BDO নীলাদ্রিশেখর দে। এবার স্ট্রংরুমের বাইরে ভোট দেওয়া ব্যালট পেপার উদ্ধারের মামলায় বাঁকুড়ার বড়জোড়ার BDO, SDO এবং একজন প্রিসাইডিং অফিসারকে তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট।


সিপিএমের অভিযোগ, ১১ জুলাই, বড়জোড়ায় গণনাকেন্দ্রের বাইরে, তাদের পক্ষে ভোট পড়া প্রচুর ব্যালট পেপার উদ্ধার হয়েছিল। এর প্রতিবাদে ২৬ জুলাই, বিডিও অফিসের সামনে বিক্ষোভও দেখায় সিপিএম। কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন, বাঁকুড়া জেলা পরিষদের বাম প্রার্থী শ্যামলী রায়। সেই মামলার শুনানিতে বুধবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে, মামলাকারীর আইনজীবী দাবি করেন, স্ট্রংরুমের বাইরে থেকে সিপিএমের পক্ষে ভোট দেওয়া ২৪৮টি ব্যালট পেপার উদ্ধার করেছিলেন গ্রামবাসীরা।


সরকারপক্ষের আইনজীবী পাল্টা অভিযোগ করেন, নকল ব্যালট ছাপানো হয়েছিল। যার প্রেক্ষিতে বিচারপতি জানতে চান, গ্রামবাসীরা ব্যালট ছাপানোর টাকা পাবেন কোথা থেকে? কীভাবে স্ট্রংরুমের বাইরে ব্যবহৃত ব্যালট পাওয়া গেল, তা জানতে চেয়ে ৮ অগাস্ট, বড়জোড়ার BDO সোমনাথ পণ্ডিত, মহকুমাশাসক সুশান্ত ভক্ত এবং ১৬৭ নম্বর বুথের প্রিসাইডিং অফিসারকে হাজিরার নির্দেশ দেন। 


আরও পড়ুন, ‘চিটফান্ড মালিকের সঙ্গে বিদেশ গিয়েছিলেন, ওদের সাংসদের কিছু হয়নি', নুসরত প্রশ্নে মমতা


আদালতের এদিনের নির্দেশকে হাতিয়ার করে ফের রাজ্য সরকারকে বিঁধেছে বিজেপি। যদিও কোনও মন্তব্য করতে চায়নি তৃণমূল। বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, 'এসডিও বিডিওদের কয়েকজনের নাম সামনে আসছে। আরও অনেকেই এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। শাসকদলের তাবেদারি করে এই দুর্নীতি করা বরদাস্ত করা যাবে না। আদালত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। উপযুক্ত তদন্ত করে কড়া শাস্তি দেওয়া উচিত।  মুখ্যমন্ত্রীর সব দুর্নীতিগ্রস্তদের পাশে থাকেন  এসডিও বিডিওদের পাশেও থাকছেন।' 


এ প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, 'সম্পূর্ণ আইনি বিষয়, আদালত ডেকে পাঠিয়েছে, ওরাই বলতে পারবেন।' সব মিলিয়ে ভোট পরিচালনায় বিডিও, এসডিও-দের একাংশের ভূমিকা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই।